যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত করার সেরা ৬টি উপায়

যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত করার সেরা ৬টি উপায়

যোগাযোগ দক্ষতা উন্নতকরন Communication Skill গড়ে তোলার সেরা উপায়

Communication Skills বা যোগাযোগ দক্ষতা এমন একটি দক্ষতা যা আপনার জীবনের সকল ধাপে কাজে লাগবে। চাকরি করুন কিংবা ব্যবসা সকল স্থানে যোগাযোগ দক্ষতা লাগবেই। আমাদের অনেকের কাছে এই যোগাযোগ দক্ষতা নামটা শুনলেই ভয় লাগে, মনে হয় এটি আমার দ্বারা হবে না, অনেক ভয়ঙ্কর কিছু। প্রকৃত পক্ষে যোগাযোগ দক্ষতার মত এত সহজ আর কোন দক্ষতা নেই যা খুব সহজে আয়ত্ত করা যায়। 

যোগাযোগ দক্ষতা আসলে কি?

যোগাযোগ দক্ষতা হল অন্যের দেয়া তথ্য বুঝতে পারা এবং নিজে যা বলতে চাই তা অন্যকে বুঝাতে পারা। আরো সহজ করে বললে বলা যায়, আমি যা বলছি তা যদি আপনি বুঝতে পারেন এবং আপনার কথা যদি আমি বুঝতে পারি সেইটাই যোগাযোগ দক্ষতা।

যোগাযোগ করার পদ্ধতি মুলত সময়-সুযোগ এবং পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। যেমন কেউ চাইলে মৌখিক ফেইস-টু-ফেইস, লিখিত, গ্রুপ মিটিং, নোটিশ বোর্ড, ভিজ্যুয়াল ইত্যাদি নানা পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারে।

আবার যোগাযোগ করার কিছু মাধ্যম আছে যা একই ভাবে সময়-সুযোগ এবং পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। যেমন ফেইস-টু-ফেইস, চিঠি, মেমো, রিপোর্ট, নোটিসবোর্ড, ফ্যাক্স, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, কমেন্ট, ভিডিও কনফারেন্স, ভিডিও ম্যাসেজ এবং এমনকি শারীরিক ভাষাও একটি যোগাযোগ করার মাধ্যম।

যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য যে ৬টি বিষয়ের উপর নজর দিতে হবেঃ 

#১। Listening skill বা কথা শোনার দক্ষতা

একজন ভাল শ্রোতা হওয়া একজন ভাল যোগাযোগকারী হওয়ার অন্যতম সেরা উপায়। সুন্দর করে কথা বলা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ তবে এর থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ আপনি অন্যের কথা কতটা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। আপনি যদি ভাল শ্রোতা না হন তবে আপনাকে কী করতে বলা হচ্ছে বা কি বোঝানো হচ্ছে তা বুঝতে পারবেন না।

#২। শারীরিক ভাষা

যখন আপনি কারো সাথে কথা বলবেন তখন আপনার দাঁড়ানোর ধরন, হাতের অঙ্গভঙ্গি, eye contact, কথা বলার ধরন সব কিছুই ঐ মানুষটি লক্ষ্য রাখে।

বিশেষ করে অপরিচিত কোন মানুষের সাথে প্রথম কথা বলার সময় মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে আপনার সম্পর্কে একটা আইডিয়া করে ফেলে।

আপনার অন্যের সাথে কি বিষয় নিয়ে কথা বলছেন তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ তবে এর থেকে গুরুত্বপূর্ণ আপনি ঐ কথাটি কিভাবে বলছেন। আপনার কথায় অবশ্যই বিনয়ী সুর থাকতে হবে।

#৩। স্পষ্ট করে বলা এবং সংক্ষিপ্ত করণ

আমরা অনেকেই টিভিতে টকশো দেখেছি। আপনি একটু খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন, কিছু গেস্ট কথা বলার সময় অনেক বেশী সময় নেয় এবং মূল কথায় আসার আগেই তার সময় শেষ হয়ে যায়।

যেমন ধরুন, অনেকে এভাবে বলে যে, আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আমি এখানে আসতে পেরে অনেক খুশী। উপস্থাপনকে ইঙ্গিত দিয়ে বলে যে, আপনার মাধ্যমে আমি দেশবাসী, প্রিয় দর্শক, আমার শুভাকাক্ষিদের জানাতে চাই, আসলে এটা আরো আগেই আমার বলা উচিত ছিল।

ব্যস্ততার কারনে বলতে পারি, যাই হোক এখন সুযোগ পেয়েছি এখন বলার চেষ্টা করছি, আমি জানি আমার প্রতিপক্ষ কখনোই এই কথা ভালো ভাবে নিবে না। এই ভাবে কথা বলার মাধ্যমে আসলে তিনি কি বোঝাতে চায় তা কারো কাছেই বোধগম্য হয় না।

এর মধ্যে তার সময় শেষ হয়, পরে তিনি আবার অভিযোগ করে আমাকে সময় দেয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে এটা কখনই ভালো যোগাযোগকারীর গুন হতে পারে না।

আপনি যখন যেই বিষয় কাউকে কিছু বলবেন তখন তা অবশ্যই স্পষ্ট এবং সংক্ষিপ্ত করে বলতে হবে।  

#৪। আঞ্চলিক এবং সংস্কৃতিক জ্ঞান

বন্ধুত্বপূর্ণ সুলভ আচরণ মানেই এই না যে সবাই আমাদের বন্ধু। একজন দক্ষ যোগাযোগকারীর মধ্যে অবশ্যই আঞ্চলিক এবং সংস্কৃতিক জ্ঞান থাকতে হবে।

আপনি যদি গ্রামে গিয়ে কথায় কথায় ইংলিশ বাক্য বলেন তবে আপনি কখনই ভালো যোগাযোগকারী হতে পারেন না।

আবার ধরুন, অ্যামেরিকায় একজন ছাত্র তার শিক্ষককে নাম ধরে ডাকতে পারে, এটা তাদের সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি আমাদের দেশে প্রয়োগ করতে পারবেন না।

#৫। Complete বা পরিপূর্ণ তথ্য দিয়ে কথা বলা

একজন দক্ষ যোগাযোগকারি অবশ্যই অর্ধেক বা অসম্পূর্ণ কথা বলে না। ধরুন আপনি একটি মিটিং এর আয়োজন করেছেন এবং আপনার কোণ এক কর্মচারীকে বললেন অন্যদের জানিয়ে দিতে।

আপনি যদি নিদিষ্ট তারিখ, সময়, স্থান না বলেন তাহলে আপনার কর্মচারী কখনোই অন্যদেরকে জানাতে পারবে না। তাই আপনার কথায় পরিপূর্ণ তথ্য থাকতে হবে।  

#৬। আত্মবিশ্বাস

যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। বিশেষ করে কর্ম জীবনে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি থাকলে খুব বেশী দূর এগিয়ে যাওয়া যায় না। আত্মবিশ্বাস নিয়ে সাথে কথা না বললে তবে আপনার কথা অন্যরা গ্রহন করবে না। একই সাথে আপনি সর্বদা অন্য ব্যক্তির কথা শুনছেন এবং সহানুভূতিশীল তা নিশ্চিত হতে হবে।