ব্যবসা করার নিয়ম

ব্যবসা করার নিয়ম

ব্যবসা করার নিয়ম

ব্যবসা করার নিয়ম

আপনি কি একজন উদ্যোক্তা হতে চান? ব্যবসা করার নিয়ম জানতে চান? যদি আপনি কোন ব্যবসা সম্পর্কে উৎসাহী হয়ে থাকেন, অথবা বাজারের একটি শূন্য স্থান পূরণ করার উপায় খোঁজ পেয়ে থাকেন তাহলে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার কর্ম জীবন শুরু করতে পারেন। যেখানেই আপনার আগ্রহ সে বিষয়টি নিয়েই আপনি নিশ্চিত ভাবে ব্যবসার প্রতি অগ্রসর হতে পারেন।

ব্যবসা শুরু করা সহজ, এই চিন্তা করা বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়। একটি ব্যবসা শুরু করতে প্রচুর সময়, প্রচেষ্টা এবং কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন। ব্যবসা শুরু করার পূর্বে অনেক কিছু বিবেচনা ও বাস্তব সম্মত পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। এগিয়ে যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি মনে করেন ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনি প্রস্তুত আছেন তাহলে এটি কিভাবে শুরু করতে হবে তা নিচে ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হলো।

ব্যবসার ধারণাটি বার বার গবেষণা করুন

মনের মত একটি বিজনেস আইডিয়া পেয়েছেন মানে এই না যে আপনি সফল। যে বিজনেস আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে চান তার নানা দিক, মানে সুবিধা অসুবিধা নিয়ে বার বার গবেষণা করুন।

আপনি যে পণ্যটি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান এমন পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানীর অনুসন্ধান করুন এবং তারা কি করছেন তা শিখুন। আপনার সেবা কিভাবে তাদের চেয়ে উন্নত করা যায় সে বিষয়ে চিন্তা করুন। যদি আপনি মনে করেন আপনার ব্যবসার ধারণাটি অন্য কোম্পানীর চেয়ে ভিন্ন তাহলে আপনি একটি সঠিক ব্যবসার ধারণা পেয়েছেন এবং একটি ব্যবসা পরিকল্পনা তৈরি করতে প্রস্তুতি নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন একটি ভাল অবস্থান এবং ব্যবসার জন্য যথেষ্ট টাকা।

ব্যবসা পরিকল্পনা লিখুন

যদি আপনার একটি বাস্তব ব্যবসার ধারণা থাকে তাহলে আপনার নিজেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন। আপনার ব্যবসার উদ্দেশ্য কি? আপনি কি বিক্রি করবেন? আপনার শেষ লক্ষ্য কি? কিভাবে আপনার প্রারম্ভিক খরচ অর্থায়ন করবেন? এই সব প্রশ্নের উত্তর গুলো একটি ভাল ব্যবসার পরিকল্পনা লিখতে সহায়ক হতে পারে। একটি ব্যবসা পরিকল্পনা আপনাকে আপনার কোম্পানী কোথায় যাচ্ছে, সম্ভাব্য অসুবিধা গুলো এবং আপনার কোম্পানীটি ঊর্ধ্বমুখী রাখতে কি প্রয়োজন তা খোঁজে বের করতে সহায়তা করবে।

আর্থিক মূল্য নির্ণয় করুন

কোন ব্যবসা শুরুর পূর্বে ব্যবসার প্রারম্ভিক মূলধন বহন করতে একটি মূল্য নির্ধারণ করতে হয়। যদি আপনার আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হয় তবে ব্যবসা শুরুর জন্য ব্যাংকিং ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। যদি আপনি ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করতে না পারেন তবে একটি বিকল্প ঋণদাতা সংস্থার মাধ্যমে ছোট ব্যবসা ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন। তাছাড়া নিজের জমানো টাকা দিয়ে ছোট আকারে শুরু করতে পারেন।

আপনার ব্যবসার আইনি কাঠামো নির্ধারণ করুন

আপনার কোম্পানীর নিবন্ধন করার আগে আপনার পণ্যটি কি ধরনের হবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। আপনি যদি সম্পূর্ণরূপে আপনার ব্যবসার মালিক হন তাহলে সমস্ত ঋণ এবং দায়বদ্ধতার দায় নিতে পরিকল্পনা করুন। আপনি একটি একক মালিকানা নিবন্ধন করতে পারেন। বিকল্পভাবে, যদি অংশীদারিত্ব ব্যবসা হয়ে থাকে তাহলে তার মানে হচ্ছে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি ব্যবসার মালিক হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী।

সরকারী নিবন্ধন সংগ্রহ করুন

ব্যবসা শুরু করার জন্য আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেতে অবশ্যই সরকারী সংস্থা গুলোর নিকট হতে নিবন্ধন সংগ্রহ করতে হবে। নিবন্ধন করার জন্য একটি নিবন্ধন ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয় যেখানে আপনার কোম্পানীর নাম, ব্যবসার উদ্দেশ্য, ব্যবসার কাঠামো, এবং কোম্পানীর অন্যান্য তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

অতিরিক্ত আইনী সুরক্ষার জন্য আপনার ব্যবসার নামটি ট্রেডমার্ক করতে পারেন। রাষ্ট্রীয় আয়কর বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য আপনাকে অবশ্যই কিছু ফর্ম জমা দিতে হবে। আপনার ফর্ম গুলো প্রয়োজনীয় ব্যবসার কাঠামো দ্বারা নির্ধারিত হতে হবে।

আরো পড়ুন – ট্রেড লাইসেন্স ব্যবসার শুরুতেই তৈরি করে ব্যবসায় নিজেকে এগিয়ে রাখুন

একটি বীমা নীতি ক্রয় করুন

আপনার ব্যবসার জন্য সঠিক বীমা ক্রয় করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আপনার ব্যবসা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার আগেই এই ধাপটি সম্পন্ন করা উচিত। এই বীমা আপনাকে আপনার ব্যবসায়িক সম্পত্তির ক্ষতি, চুরি বা কোন গ্রাহকের মামলা মোকাবেলায় সুরক্ষার নিশ্চয়তা প্রদান করবে।

দক্ষ জনবল আপনার কোম্পানীর উন্নতির জন্য দক্ষ জনবল নিয়োগ করা প্রয়োজন।

বিক্রেতা মনোনীত করুন

আপনি একা একটি ব্যবসা পরিচালনা করতে সক্ষম নাও হতে পারেন। তাই তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতাদের নিয়ে আসা দরকার। তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতাদের সহযোগিতায় ব্যবসা পরিচালনা করা সহজতর হতে পারে। জেনে নিন – দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায় সফল হবেন যেভাবে

ব্যান্ড তৈরী করুন এবং বিজ্ঞাপন প্রচার করুন

আপনার পণ্য বা সেবা বিক্রি শুরু করার আগে আপনার একটি ব্যান্ড তৈরি করা প্রয়োজন। একটি লোগো তৈরি করুন যা সহজেই মানুষকে আপনার ব্যান্ড সনাক্ত করতে সহায়তা করবে। আপনার নতুন ব্যবসাটি সম্পর্কে মানুষকে জানাতে ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ব্যবসা সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক ও আর্কষণীয় কনটেন্ট ওয়েবসাইট প্রকাশ করুন।

আপনার ব্যবসা বৃদ্ধি করুন

আপনার ব্যবসার শুরু এবং প্রথম বিক্রয় মানেই একজন উদ্যোক্তা হিসেবে শুধমাত্র আপনার কর্মের শুরু। ব্যবসাটি বহাল রাখতে এবং লাভবান হতে ব্যবসাটি ক্রমবর্ধমান রাখা প্রয়োজন।