দৈনন্দিন জীবনের কিছু অলিখিত নিয়ম যা আপনাকে জীবনের প্রতিটি ধাপে সফল করবে

জীবনের প্রতিটি ধাপে সফল হওয়ার অলিখিত নিয়ম

দৈনন্দিন জীবনের কিছু অলিখিত নিয়ম যা আপনাকে আরোও স্মার্ট বানাবে

সবার সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে, সত্য কথা বলতে হবে, সময়মত কাজ শেষ করতে হবে, এই সকল বিষয় হচ্ছে দৈনন্দিন জীবনের কিছু লিখিত নিয়ম। তবে আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনার সাথে এমন কিছু বিষয় তুলে ধরতে চাই যা আসলে অলিখিত নিয়ম হিসেবেই পরিচিত। আশা করছি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে আপনি চিন্তার কিছু খোরাক পাবেন যা আপনাকে জীবনের প্রতিটি ধাপে সফল বানাতে সাহায্য করবে।

#১। কেউ যদি আপনাকে তার ফোনে কোনও ছবি দেখায় তবে শুধুমাএ সেই ছবিটিই দেখবেন, বাম বা ডানদিকে স্ক্রোল করবেন না, এতে তাদের গোপনীয়তায় আক্রমণ করা হতে পারে।

#২। যে কারো রুমে ঢোকার আগে নক করে ঢুকুন, এমনকি বাচ্চাদের রুমেও, এতে ঐ বাচ্চা অন্য কারো রুমে ঢোকার আগে নক করেই ঢুকবে।

#৩। পরিচিত কিংবা অপরিচিত যে কেউ যখন আপনার সাথে কথা বলবে তখন আপনার চোখে যদি সানগ্লাস থাকে তবে তা খুলে কথা বলুন।

#৪। কেউ যদি আপনাকে খাওয়ানোর জন্য রেস্টুরেন্টে নিমন্ত্রণ জানায় তবে দামী কোনো খাবাবের অডার করবে না।

#৫। কারো কাছ থেকে ধার করে আনা জিনিষ তার চাওয়ার আগেই ফেরত দিন। বিশেষ করে টাকা, বই, জামা কাপড় ইত্যাদি। আপনি যদি কারো কাছ থেকে কাপড় ধার করেন তবে ফিরিয়ে দেওয়ার সময় ভালো করে ধুয়ে ও ইস্ত্রি করে ফিরিয়ে দিন। 

#৬। কোনো অনুষ্ঠানে কেউ যদি পারফর্ম না করতে চায় তবে কখনই জোড় করবেন না।

#৭। কাউকে ফোন করার দরকার হলে দুই বারের বেশী কল দিবেন না।

#৮। বাস, ট্রেনে, অফিসে, ক্লাসে বা যে কোনও জায়গায় কেউ যদি মোবাইল ব্যবহার করতে থাকে তবে আপনি মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না।

#৯। রিস্কাওয়ালা, সিএনজি ড্রাইভার বা যেকোনো মেহনতি মানুষ আপনার থেকে বয়সে বড় হোক কিংবা ছোট হোক তাদের সাথে তুই এমননি তুমি বলেও সম্মোধন করবেন না। তাদের সাথে আপনি বলে সম্মোধন করা উচিত। কেননা তারা শ্রম দিচ্ছে এবং আপনার আমার মতই তাদেরও আত্নসন্মানবোধ রয়েছে। 

#১০। অন্যের বাচ্চাকে কোলে তুলে কখনই চুমু খাবেন না, এই বিষয়টা অনেক বাবা-মা সহ্য করতে পারে না।

#১১। অল্পসময়ে পরিচিত ছোট বাচ্চাদেরকে কখনই চকলেট বা উপহার দিবেন না, এতে অনেকেই আপনার উদ্দেশ্য নিয়ে বিভ্রান্ত হতে পারে।

#১২। হঠাৎ রাস্তায় পরিচিত কাউকে দেখলে উচ্চস্বরে ঢাকবেন না। দরকারে তার কাছে গিয়ে কথা বলবেন।

#১৩। এটিএম বুথের মধ্যে আপনার কোনো বন্ধু বা অন্য যে কোনো মানুষকে নিয়ে এক সাথে ঢুকবেন না, কারন আপনি কখনই জানেন না কার মনে কি আছে। 

#১৪। কোনো একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আগের দিন চুল কাটাবেন না, এতে আপনাকে দেখতে সুন্দর নাও লাগতে পারে,  বিশেষ অনুষ্ঠানের কম পক্ষে এক সপ্তাহ আগে চুলা কাটা উচিত।

#১৫। বেকার বন্ধুদের সাথে আপনার ইনকামের কথা শেয়ার করবেন না, এতে তারা মনে মনে কষ্ট পেতে পারে।

#১৬। যখন কেউ আপনার পুরো নাম ধরে কথা বলবে বা ঢাকবে তখন সেই বিষয়টা খুবই গুরুত্ব বহন করে। 

#১৭। টাকা পয়সা নিয়ে অন্য কারো দেওয়া উপদেশ শতভাগ মেনে চলবেন না, হয়ত এটি তার জন্য ভালো ছিল আপনার জন্য ভালো নাও হতে পারে। যত সম্ভভ তত বেশী উপদেশ সংগ্রহ করুন এবং নিজের বুদ্ধি দিয়ে কাজ করুন।

#১৮। কারো সাথে কথা বলার সময় নীচের দিকে কিংবা উপরের দিকে তাকিয়ে কথা বলবেন না, যতটা সম্ভব চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার চেষ্টা করুন।

#১৯। দরজায় দাড়িয়ে কারো সাথে আলাপ দীর্ঘ করবেন না। দরকার হলে ঘরে বসে কথা বলুন বা বাইরে গিয়ে কথা বলুন।   

#২০। কেউ যদি বলে তার ডাক্তারের কাছে অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে, তাহলে আপনি এর কারন জিজ্ঞাসা করবেন না, বলার মত হলে সে নিজের থেকেই বলবে।

#২১। কারো একটি সুন্দর শার্ট, প্যান্ট, কিংবা মোবাইল দেখে যদি জিজ্ঞাসা করেন এর দাম কত, এর উত্তরে সে যদি বলে উপহার পেয়েছি তবে আর কোনও প্রশ্ন করবেন না। বিস্তারিত বলার থাকলে সে নিজের থেকেই বলবে।

#২২। কারো বাসায় বেড়াতে যাতে চাইলে আগে ফোন করে জানিয়ে যান, সারপ্রাইজ দিতে চাইলেও আগে ফোন করে তার বর্তমান কি অবস্থা তা জেনে নিন, এবং খালী হাতে না গিয়ে কিছু না কিছু কিনে নিয়ে যান।

#২৩। কারো সামনে হোক কিংবা একাকী অবস্থায় থাকুন না কেন হাঁচি, কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখুন।

#২৪। কারো দুর্বলতা দেখে হাঁসবেন না, কেননা আপনিও সব বিষয়ে পারদর্শী নন।

#২৫। যে কোনো দোকানে গিয়ে একদম মাঝখানে দাড়াবেন না, একটি পাশ করে দাড়ান কেননা এতে অন্যকেউ আসতে ও যেতে পারবে।  

#২৬। কারো অনুমতি না নিয়ে কারো কম্পিউটারের কোন ফাইল কপি করতে যাবেন না।

#২৭। নতুন বন্ধুদের সাথে বাইরে ঘুরতে গিয়ে পুরাতন বন্ধুদের মিস করছেন তা বলবেন না, আবার একইভাবে পুরাতন বন্ধুদের সাথে ঘুরতে দিয়ে নতুন বন্ধুদের মিস করছেন তা বলবেন না। এতে উপস্থিত থাকা বন্ধুদের অবমূল্যায়ন করা হয়।

#২৮। কাউকে যদি কোন কিছুর পাসওয়ার্ড লিখতে দেখেন তবে সাথে সাথে আপনার চোখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে ফেলুন।

#২৯। আপনাকে জিজ্ঞাসা না করা পর্যন্ত আপনার ধর্মীয় অনুভুতি, রাজনৈতিক, ও অর্থনৈতিক মতামত বলতে যাবেন না।  

#৩০। বাকিতে পণ্য কেনা এড়িয়ে যান, বাকিতে পণ্য কিনলে অতিরিক্ত জিনিস বেশী কেনা হয়, যা আপনার আর্থিক স্বাধীনতার পথে বড় বাঁধা।

#৩১। আপনার শত্রুদের সামনে কখনই আপনার রাগ কিংবা অভিমান দেখাবেন না, কেননা এটাই তারা দেখতে চায়।

#৩২। ফোনে কথা বলার সময় যতটা সম্ভব আস্তে কথা বলুন, কেননা আপনি অবশ্যই আপনার নিজস্ব কথা অন্যকে শুনাতে চাইবেন না এবং অন্য কেউকে বিরক্ত করতেও চাইবেন না।    

আরোও পড়ুন – জীবন, সুখ, সফলতা এবং মানুষ সম্পর্কে ৬০ টিপস

#৩২। কারো সাথে হাঁটার সময় তার সাথে তাল মিলিয়েই হাঁটুন, একটু সামনে বা একটু পিছনে হাঁটবেন না। তাছাড়া হাঁটার সময় পায়ের গোরালি আগে ফেলুন এতে শব্দ হবে না। 

#৩৩। বাস, ট্রেন, লিফটে সব সময় আগে নামতে দিন, পরে উঠুন। 

#৩৪। কেউ কানে হেড লাগিয়ে বসে থাকলে তার সাথে কোনো কথা বলতে যাবেন না। হেড লাগিয়ে বসে থাকা মানে হচ্ছে সে চাচ্ছে না কেউ তার সাথে কথা বলুক।

#৩৫। পাবলিক প্লেসে শরীরের যেকোনো অঙ্গ চুলকানো এবং যেখানে সেখানে কফ বা থুতু ফেলা থেকে বিরত থাকুন।

#৩৬। লম্বা জার্নি শুরু করা আগে গোসল করে নিন, এতে আপনাকর শরীর ও মন ভালো থাকবে।

#৩৭। খাবার হোটেলে কর্মরত ছোট বাচ্চাটিকে এই পিচ্ছি বলে ঢাকবেন না এবং আপনার থেকে বয়সে ছোট হলেই অন্যেকে তুই বলেও ঢাকবেন না। 

#৩৮। এক দোকানদারের সাথে অন্য দোকানদারের সুনাম বা দুর্নাম করবেন না।

 #৩৯। আপনার যা আছে তাই নিয়ে শুকরিয়া করুন এবং যা পেতে চান তার জন্য পরিশ্রম করুন।

#৪০। ভালো জিনিসকে সব সময় উৎসাহ দিন এবং খারাপ বিষয় ঢেকে রাখুন। // কে এম চিশতি সিয়াম – ইউটিউব লিঙ্ক