শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে ন্যূনতম কত টাকা লাগবে এবং কিভাবে বিনিয়োগ করা যায়?

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ হোক আয়ের অন্যতম মাধ্যম

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে ন্যূনতম কত টাকা লাগবে এবং কিভাবে বিনিয়োগ করা যায়_

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন? আসুন খুব সংক্ষেপে জেনে নেই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে ন্যূনতম কত টাকা লাগবে এবং কিভাবে বিনিয়োগ করা শুরু করা যায়।

আপনি হয়ত ইতিপূর্বে জানেন যে, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট লাগে, যার নাম বিও অ্যাকাউন্ট।

খুব সংক্ষেপে যদি বিও অ্যাকাউন্ট এর একটু পরিচয় দেই তবে এভাবে বলা যায় যে, বিও অ্যাকাউন্ট এমন একটি অ্যাকাউন্ট যার মাধ্যমে কোন কোম্পানির শেয়ার কেনা বেচা করা যায়।

যেমন; ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেন হয় ঠিক তেমনি বিও অ্যাকাউন্ট শেয়ার লেনদেন হয়।

CDBL এই অ্যাকাউন্ট এর নাম্বার দিয়ে থাকে এবং ব্রোকার হাউস বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে সহায়তা করে।

সাধারনত একটি বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে আপনাকে ৪৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা খরচ করতে হতে পারে।

পড়ুন – বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে কি কি লাগে

এই টাকাটাই আপনার এককালীন বিনিয়োগ এছাড়া বিও অ্যাকাউন্টটি রক্ষানাবেক্ষনের জন্য প্রতি বছর জুন মাসে ৪৫০ টাকা CDBL কে চার্জ দিতে হবে।  

তাহলে একটা বিষয় মোটামুটি শেষ হল যে, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের প্রথম ধাপে অ্যাকাউন্ট খুলতে আপনাকে ৬০০ টাকা খরচ করতে হবে।

এবার আরেকটু গভীরে আসি!

আপনি জানেন যে, শেয়ার বাজারে দুই ভাবে টাকা বিনিয়োগ করা যায়। এক আইপিও মার্কেট বা প্রাইমারি মার্কেট এবং ২য়টি হচ্ছে সেকেন্ডারি মার্কেট।

আমাদের দেশে প্রাইমারি মার্কেট মোটামুটি রিস্ক ফ্রী হওয়ায় অনেকেই শুধুমাএ প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগ করে এবং ভাল টাকা আয় করে।

যদিও শুধুমাএ প্রাইমারি মার্কেটে বিনিয়োগ করা সামগ্রিক বাজারের জন্য মোটেই ভাল কথা না। আইপিওর পাশাপাশি সেকেন্ডারি মার্কেটের বিনিয়োগ করা উচিত।  

আইপিওর মাধ্যমে শেয়ার এর জন্য আবেদন করতে আপনাকে ৫০০০/৬০০০ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।

এখানে টাকার অঙ্কটা ফিক্সড না এই কারনে যে, অনেক কোম্পানি তাদের শেয়ার ফেস ভেলুতে, অর্থাৎ ১০টাকা দরে বিক্রি করে আবার অনেক কোম্পানি প্রিমিয়াম নিয়ে থাকে।

একটি বিও অ্যাকাউন্ট দিয়ে আপনি একটি কোম্পানির শেয়ারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। জেনে নিন – আইপিও (IPO)কি? কিভাবে আইপিও’তে শেয়ার পেতে আবেদন করতে হয়

এবার আসি সেকেন্ডারি মার্কেটে

সেকেন্ডারি মার্কেটে আপনি যত টাকা ইচ্ছা তত টাকাই বিনিয়োগ করতে পারবেন।

তবে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন। আপনি চাইলে এর চেয়ে কম টাকা দিয়েও শুরু করতে পারবেন, কিন্তু তাতে আসলে লাভ লসের হিসাবটা ভালো জমবে না।

তবে আপনি যত টাকাই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবেন তা যেন আপনার দরকারি টাকা না হয়।

যেমন; ধরুন এখন আপনার হাতে কিছু টাকা ফ্রী আছে যা দিয়ে আপনি দুই মাস পর ইউনিভার্সিটির ফী দিবেন ভাবছেন, এখন আপনি চাচ্ছেন এই দুই মাস এই টাকাটা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে রাখি।

একদম খালী চোখে দোষের কিছু না, কিন্তু শেয়ার বাজারে এটি একটি মহা ভুল।

কেননা আপনি জানেন না, এই দুই মাস পর আপনার টাকাটা ২০% কমেও যেতে পারে। আবার এর উল্টোও হতে পারে, তাই এই ঝুঁকি আপনাকে এড়িয়ে যেতে হবে। 

তাই আপনাকে এমন টাকা বিনিয়োগ করতে হবে যা সাধারনত ২/৩ বছরে আপনার দরকার পড়বে না এবং এই জায়গায় অনেক মানুষই ভুল করে। আপনার সেই ভুল করলে চলবে না।

পরিশেষে বলা যায় যে, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা দরকার এবং টাকার পাশাপাশি যথেষ্ট ধৈর্য্যও বিনিয়োগ করতে হবে।

ধন্যবাদ- কে এম চিশতি সিয়াম – ইউটিউব চ্যানেল