শেয়ার বাজারে ধৈর্য্য হল সবচেয়ে কম ব্যবহৃত কিন্তু অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগের দক্ষতা

শেয়ার বাজারে ধৈর্য্য

শেয়ার বাজারে ধৈর্য্য

শেয়ার বাজার এমন একটি জায়গা যেখানে অধৈর্যশীলদের টাকা ধৈর্যশীলদের পকেটে যায়। শেয়ার বাজারে ভালো করতে চাইলে অনেকগুলো গুনাবলি নিজের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে হয়।

আমরা কেউ জন্মগত ভাবে সেই সকল বিষয় নিয়ে পৃথিবীতে আসি নাই। আস্তে আস্তে অল্প অল্প করে নানা বিষয় শিখে সকল বিনিয়োগকারী হওয়ার চেষ্টা করি।

কিভাবে একটা কোম্পানির পছন্দ করব, কোন দামে কিনে কত টাকা লাভ করব তা নিয়ে প্রচুর গবেষনা করি। তবে এর মধ্যে অনেক বিনিয়োগকারী, বিনিয়োগের দক্ষতা “ধৈর্য্য” কিভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে চিন্তা করি না।

অন্য যে কোন বিনিয়োগের তুলনায় যারা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে তাদের ধৈর্য তুলনামূলক কম থাকে। এর কারন হচ্ছে আপনি প্রতিদিন দেখতে পাচ্ছেন আপনার বিনিয়োগকৃত টাকা বেড়েছে না কমেছে।

একজন মানুষ যদি ৫ বছর মেয়াদী একটা এফডিআর করে তাহলে সে কিন্তু ৫ বছর চুপ চাপ ধৈর্য নিয়েই বসে থাকে। আর যখনই সেই লোকটি শেয়ার বাজারে আসে তখনই তার ধৈর্য কমে যায়।

এর কারন সে যেখানে এফডিআর করেছে সেই টাকা দেখতে পারে না। সেই টাকা বেড়েছে না কমেছে তা নিয়ে চিন্তা নেই। সে চিন্তা করবে মেয়াদ শেষে আমিতো টাকা পাচ্ছি। অন্যদিকে, শেয়ার বাজারে তার টাকার মূল্য প্রতিদিন পরিবর্তন হচ্ছে।

শেয়ার বাজারে সফল হতে চাইলে যেমন আপনার টাকা থাকতে হবে, ঠিক তেমনি ধৈর্য্য থাকতে হবে। ধৈর্য্য ধরে রাখা হল ভবিষ্যতের পুরস্কারের জন্য কিছু স্বল্পমেয়াদী কষ্ট সহ্য করা।

শেয়ার বাজার এমন কোনো জায়গা না যে, হয় ছক্কা না হয় ফাক্কা। শেয়ার বাজারে অন্যতম বৈশিষ্ট্য শেয়ারে দাম বাড়বে এবং কমবে।

যেমন সাগরে একটা ডেউ আসে আবার চলে যায়, আবার একটা ডেউ আসে আবার চলে যায়। এভাবে শেয়ার বাজার চলে।

শেয়ার বাজার যদি টানা বাড়তেই থাকে তাহলে তা কোনদিন ঠিক থাকতে পারে না, আমার টানা পতনও হতে পারে না। একজন বিনিয়োগকারী যদি টাকার সাথে ধৈর্য বিনিয়োগ নাই করতে পারে তবে সে সফলও হতে পারে না।

এখানে ধৈর্য মানে এই না যে, আপনি একটা শেয়ার কিনবেন এবং ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে অনেক বছর অপেক্ষা করবেন। ধরুন, ১০০ টাকা দিয়ে একটা শেয়ার কিনলেন, ৬ মাস পরে সেই শেয়ারের দাম হলো ১৫০ টাকা।

আপনি ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে বসে আসেন, আবার ৬ মাস পরে দাম হলো ১২০ টাকা, আবার এর কিছু দিন পরে দাম হলো ৯০ টাকা, তাহলে এখানে এই ধৈর্যের মূল্য থাকে না। মূলত, ধৈর্যকে একটা পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।

আপনি কি অর্জন করতে চান তা পাওয়ার জন্য যে সময় লাগবে সেই সময়টুকু ধৈর্য ধারন করতে হবে। এর জন্য আপনার থাকা চাই পরিকল্পনা এবং মানি ম্যানেজমেন্ট জ্ঞান। আমাদের যাদের ধৈর্য কম তাদেরকে অবশ্যই একটা পরিকল্পনা নিয়েই বাজারে আসতে হবে।

যেমন, আমি কত টাকা কত দিনের জন্য বিনিয়োগ করব তা ঠিক করা। সেই অনুসারে একটা বাস্তব সম্মত লাভের প্রত্যাশা করা, দাম কমলে সঠিক ভাবে মানি ম্যানেজমন্ট করা এই সবই আপনার ধৈর্যের অন্তভুক্ত।

যেমন অনেক সময় বিও একাউন্টে কিছু টাকা অলস টাকা রেখে দেওয়াকে অনেকে ভিত্তিহীন মনে করে, তারা ভাবে অলস রেখে কি লাভ, কিনলেই তো লাভ হবে। মূলত, অনেক সময় এই অলস টাকা একটা ভালো সুযোগ করে দিতে পারে।

আরো পড়ুন-

এই যে, আপনি শেয়ার না কিনে অলস অবস্থায় রেখে দিলেন এটাও আপনার ধৈর্য। কোন যুক্তিযুক্ত কারন ছাড়াই শেয়ার কেনার পর দাম কমে গেল, এখন সেল না করে বসে আছেন এটাই আপনার ধৈর্য।

শেয়ার কেনার পর দাম বাড়লো, এবং কাক্ষিত লাভ না পাওয়া পর্যন্ত বসে আছেন এটাই আপনার ধৈর্য।

তবে আমরা আগেই জেনেছি, ধৈর্য একমাএ সফলতা উপায় না। আমরা যেই সফলতা পেতে চাই তা অর্জন করার জন্য যে সময় টুকু বিনিয়োগ করতে হবে তাই ধৈর্য। ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল – Bangla Preneur YouTube Channel