শেয়ার বাজারে স্টপ লস কি কেন এবং কখন ব্যবহার করবেন Stop Loss Explained in Bangla

শেয়ার বাজারে স্টপ লস কি কেন এবং কখন ব্যবহার করবেন Stop Loss Explained in Bangla

শেয়ার বাজারে স্টপ লস কি কেন এবং কখন ব্যবহার করবেন

Stop Loss Explained in Bangla

আমার খুব কাছের এক বন্ধু ৫০০০ টাকা আমার কাছ ধার নিয়েছে। বলেছিল ১ মাসের মধ্যে ফেরত দিবে, কিন্তু এক মাস শেষ হওয়ার পরও সে এখনো দিচ্ছে না। হঠাৎ একদিন আমাকে বলল ৫০০০ টাকা তো দিতে পারছি না, আমার কাছে ৪০০০ টাকা আছে তুমি কি নিবে?

যদি না নাও তাহলে পুরো টাকা দিতে আরো অনেক সময় লাগবে এমন কি আমি নিশ্চিত না যে টাকাটা ফেরত দিতে পারব। এই অবস্থায় অবশ্যই আমার উচিত তার দেওয়া প্রস্তাব গ্রহন করা, ৪০০০ টাকা বুঝে নেওয়া।

এই যে তাকে আমি ৫০০০ টাকা ধার দিয়ে ১০০০ টাকা লস করলাম এবং বাকি টাকার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছি এটাই হচ্ছে স্টপ লস। যতটকু লস হয়েছে তা মেনে নেওয়া এবং বাকী টাকা বুঝে নেওয়া।
আমাদের দেশে সাধারণত খুব কম বিনিয়ো|গকারী শেয়ারবাজারে স্টপ লস দিয়ে থাকে। আমাদের মধ্যে শেয়ারের দাম এভারেজ করার প্রবনতা বেশী, যদিও এর পিছনে অনেক কারন আছে।

পড়ুন – শেয়ারের দাম অ্যাভারেজ ডাউন করার উপায় কি

শেয়ারবাজারে যারা ঘনঘন ট্রেড করে তাদের মধ্যে স্টপ লস করার বা স্টপ লস দেওয়ার প্রবণতা বেশি কাজ করে। যারা লংটাইম বা দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করে তারা সাধারণত স্টপ লস দেয় না। 
ধরুন, আপনি ১০০ টাকা দিয়ে একটি শেয়ার কিনলেন এবং কিছু দিন পর শেয়ারটির দাম কমে হলো ৯৩ টাকা। এখন আপনার ধারনা এই শেয়ারটি সেল করে দিবেন, যা লস হয়েছে তা মেনে নিয়ে মূল টাকা ক্যাশ করে অন্য একটি শেয়ারে বিনিয়োগ করে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠবেন এবং লাভও করবেন। এটাই হচ্ছে স্টপ লস।

যারা দক্ষ এবং অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী তারা স্টপ লস দিয়ে ভালো করতে পারে, তবে সমস্যা  হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারী যখন স্টপ লস দেয় তখন আবার নতুন যেই শেয়ারটি সে কিনে সেটির দামও যদি কমে যায় তখন সে বিপদে পরে।

শেয়ারবাজারে কিছু কিছু মুহূর্তে স্টপ লস দেওয়া উচিত। যেমন আপনি একটি কোম্পানির শেয়ার কিনলেন এবং কোম্পানিটি কারখানায় আজকে আগুন লেগে গেল, এই অবস্থায় সেই কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া উত্তম।

যখন ওই কোম্পানির দাম কমতে কমতে বেশ কমে যায় এবং কোম্পানিটি আবার কল কারখানা চালু করার সম্ভাবনা থাকে তখন সেই কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারলে দারুন লাভ করার সুযোগ থাকে।

আবার ধরুন কোম্পানিটি উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে, ব্যবসা-বাণিজ্য তাদের অনেক কমে গেছে এই অবস্থায় স্টপ লস দেওয়া যেতে পারে।

আবার যদি এমন হয় যে কোম্পানির পারফরম্যান্স ঠিক আছে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক করতেছে, সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিন্তু তারপরও শেয়ারের দাম কমতেছে এই অবস্থায় স্টপ লস দেওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। 

আরো পড়ুন-

যখন কোম্পানিটির সবকিছু ঠিকঠাক থাকে কিন্তু তারপরও দাম কমে যায়, ওই সময়ে যারা কিনতে পারে তারা সাধারণত শেয়ারবাজার থেকে লাভ করতে পারে।

স্টপ লস দেওয়ার আগে কেন স্টপ লস দিচ্ছেন তার যথেষ্ট শক্তিশালী কারণ থাকতে হবে। শুধুমাত্র সাময়িক দাম কমার কারণে স্টপ লস দেওয়ার কোন মানে থাকেনা।

যারা খুব বেশী ঘন ঘন শেয়ার কেনা/বেচা করে তারা সব সময় তাড়াতাড়ি ফলাফল চায়। লাভ কিংবা লস যাই হোক না কেন তা যেন খুব তাড়াতাড়ি হয় তা প্রত্যাশা করে।

এর ফলে তারা খুব বেশী লাভ করতে পারে না। কেননা, যখন শেয়ারের দাম কমে যায় তখন বিক্রি করার জন্য অস্থির হয়ে যায় একই ভাবে শেয়ারের দাম যখন বেড়ে যায় তখনও বিক্রি করার জন্য অস্থির হয়ে যায়।

তাই একজন সাধারন বিনিয়োগকারী হিসাবে আমাদের উচিত হবে ধৈর্য সহকারে বিনিয়োগ করা, একই সাথে কোম্পানির কোন দুর্ঘটনা ঘটলে স্টপ লস দিয়ে আমাদের পুঁজি রক্ষা করা। ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল – Bangla Preneur YouTube Channel