৪ টি ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগে ব্যবসা ধারনা

ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগে ব্যবসা ধারনা

ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগে ব্যবসা ধারনা

ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগে ব্যবসা ধারনা

বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার ধারনা খুঁজছেন? ব্যবসা করে সফল হতে হলে পরিকল্পনা, সততা ও পুঁজি থাকা চাই। অল্প পুঁজি দিয়েও ব্যবসা করা যেতে পারে। আবার সততা না থাকলে বেশী পুঁজি দিয়েও ব্যবসা করলেও লসে হতে পারে। এছাড়া সঠিক ব্যবসায়িক পরিকল্পনা না থাকলে পুঁজি বা সততা এই দু’ই কোন কাজে লাগবে না। তাই এই তিনকে (পরিকল্পনা, সততা ও পুঁজি) এক সাথে কাজে লাগাতে পারলে যেকোন ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব।

আজকের এই লেখার মাধ্যমে আপনার সাথে ৪ টি ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগে লাভজনক ব্যবসার ধারনা নিয়ে আলোচনা করব। লেখাটি বড় হওয়ায় ও পড়ার সুবিধার জন্য আলাদা আলাদা পেইজে লেখাটি সাজানো হলো। আশা করছি সম্পূর্ণ লেখাটি পড়লে আপনি কিছু ভিন্নধর্মী লাভজনক ব্যবসার ধারনা খুঁজে পাবেন।

ব্যবসার ধারনা #১ – স্টেশনারি ব্যবসা

স্টেশনারি ব্যবসা একটি মাঝারি লাভজনক ব্যবসার ধারনা। এই ব্যবসা শুরু করতে খুব বেশী পুঁজির দরকার হয় না। ছোট সাইজের একটি দোকান ভাড়া নিয়ে স্কুল, কলেজ বা অফিস এলাকার এই ব্যবসা করতে পারেন।

স্টেশনারি পণ্যের তালিকাঃ দোকান ভাড়া নেওয়ার আগে আপনাকে স্টেশনারি পণ্য সম্পর্কে ভাল ধারনা নিতে হবে। যেসকল পণ্য স্টেশনারি দোকানে বিক্রি হয় তার একটি তালিকা দেওয়া হল।

কলম, পেন্সিল, রং পেন্সিল, পেন্সিল কাটার, পেপার কাটার, ডাবল এ পেপার, পাঞ্চ মেশিন, ডেট স্ট্যাম্প সিল, পেন্সিল বক্স, ওয়ার্ল্ড ডেস্ক গ্লোব, গাম, রুলার, ক্যালকুলেটর ইত্যাদি।

স্টেশনারি ব্যবসা যে কারনে শুরু করবেন

যে কোন ব্যবসা শুরু করার আগে অবশ্যই তার কারন থাকতে হয়। আপনার ব্যবসায় যদি কোন উদ্দেশ্য ও জনপদের উপকার না হয় তাহলে বুজতে পারবেন এই ব্যবসা বেশী দিন টিকবে না।

স্টেশনারি ব্যবসা শুরু করার অন্যতম প্রধান কারন এটি একটি লাভজনক ব্যবসা ধারনা। লাভের দিক থেকে অন্য যেকোন দোকান ভিত্তিক ব্যবসার চেয়ে লাভ বেশী। তাছাড়া স্বল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করা যায় এই ব্যবসা।

বড় কোন ঝুঁকি নেই এই ব্যবসায়। দোকানের মালামাল পচে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। তাই মোটামুটি ঝুঁকিমুক্ত ব্যবসা করতে চাইলে স্টেশনারি ব্যবসা একটি সেরা ব্যবসা।

বর্তমানে স্টেশনারি পণ্য কেনা-বেচার পাশাপাশি অনেকেই মোবাইল রিচার্জ এর ব্যবসা বেছে নিয়েছে। ফলে দুইটি ব্যবসা একসাথে পরিচালনা করা যাচ্ছে।

যেভাবে শুরু করবেন

নিজের দোকান না থাকলে ভাড়া নিতে হবে। দোকান ভাড়া নেওয়ার পর স্টেশনারী আইটেম রাখার জন্য দোকানকে সাজাতে হবে। স্টেশনারি পাইকারি বাজার থেকে পাইকারি মুল্যে মালামাল কিনতে হবে।

এই ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ দিকঃ স্টেশনারি ব্যবসায় সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ব্যবসার অবস্থান। সঠিক স্থানে দোকান না নিতে পারলে লাভের পরিমান অনেক কমে যাবে। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি এলাকার এই ব্যবসা বেশ ভালই চলে। এছাড়া যেখানে অফিস বেশী সেই এলাকায়ও এই ব্যবসা করতে পারেন।

সতর্কতা! পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কেনার পূর্বে পণ্যের মান যাচাই করে নিন। ভালো মানের পণ্য কেনার চেষ্টা করুন। দোকান ভাড়া নিলে ভালোকরে চুক্তিনামা করে নিন।

ব্যবসার ধারনা #২ – হাঁস পালন

ছোট বা মাঝারি বিনিয়োগে লাভজনক ব্যবসা হিসাবে বেশ সুপরিচিত একটি ব্যবসার নাম হাঁস পালন। হাঁস পালন করা সহজ এবং লাভও নেহাত কম না। অল্প জায়গায় এবং অল্প পুঁজিতে হাঁস পালন করা গেলেও আপনি যদি বানিজ্যিক ভাবে হাঁস চাষ করতে চান তাহলে সঠিক ভাবে পরিকল্পনা করে মাঠে নামতে হবে। আসুন জেনে নেই কিভাবে বানিজ্যিক ভাবে হাঁস চাষ বা হাঁস পালন শুরু করবেন।

হাঁস পালনের উদ্দেশ্যঃ হাঁস পালনের মুখ্য উদ্দেশ্য ডিম উৎপাদন করা। হাঁসের ডিমই এই ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য হলেও, হাঁস যখন ডিম পাড়া বন্ধ করে তখন তা বিক্রি করা। তাছাড়া হাঁসের বিষ্ঠা সার হিসাবে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা।

হাঁস পালন ব্যবসা যে কারনে শুরু করবেন

  • হাঁস চাষ করা সহজ। অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় বিধায় যে কেউ এই ব্যবসা করতে পারে। এমনকি গ্রামের মহিলাদের জন্য এটি একটি ভাল ব্যবসা ক্ষেএ হতে পারে।
  • মুরগির ডিমের চেয়ে হাঁসের ডিমের চাহিদা বেশী ফলে দামও বেশী পাওয়া যায়।
  • সময় মত ভেক্সিন দিলে রোগ হওয়ার চান্স কম থাকে।
  • মাছ ও হাঁস একসাথে এক জলাশয়ে চাষ করা যায়। হাঁসের বিষ্ঠা মাছের খাবার হিসাবে কাজ করে। ফলে মাছের জন্য খাবার কম লাগে। তাছাড়া আপনি জেনে খুশী হবেন যে, হাঁস পালন করলে ওই পুকুরের মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

হাঁস পালন পদ্ধতি

আপনি দুই ভাবে হাঁস পালন করতে পারেন। মুক্ত জলাশয়ে অপরটি বদ্ধ পরিবেশে। মুক্ত জলাশয়ে আপনি ২০০ থেকে ৫০০ টি হাঁস পালন করতে পারেন। এর চেয়ে বেশী হাঁস পালন করতে হলে বদ্ধ পরিবেশ বা আটকানো ঘরে পালন করতে পারেন। একটি বিষয় জেনে রাখা ভাল যে, হাঁস পালনে পানি অবশ্যই লাগবে এমন নয়। পানি ছাড়াও হাঁস থাকতে পারে। দেখে নিন বানিজ্যিক উদ্দেশ্য হাঁস পালনের জন্য হাঁসের সেরা জাঁত।

হাঁস পালনের সময়ঃ আমাদের দেশ হাঁস পালনের জন্য সেরা। আপনি চাইলে বছরে যেকোন সময় হাঁস চাষ করতে পারেন। কেননা এই ব্যবসা শুরু করার জন্য কোন নিদিষ্ট সময় ধরা-বাঁধা নেই।

হাঁস পানিতে থাকতে পছন্দ করে। বানিজ্যিক উদ্দেশ্য হাঁস পালন করলেও এই বিষয়টি মাথায় রাখতে পারেন। অন্তত ছোট একটি জলাশয় থাকলে হাঁস পানিতে নিজের ধুয়ে নিতে পারে। কিছু দিন পর পর জলাশয়ের পানি পরিবর্তন করে দিতে পারলে খুবই ভাল হয়। তবে হাঁস থাকার স্থান কোন অবস্থায় ভিজে বা স্যাতসেতে রাখা যাবে না।

সতর্কতা! ডাক-প্লেগ ও ডাক-কলেরা থেকে আপনার হাঁস বাঁচাতে হলে টিকা দিতে হবে। যদি দেখেন কোন হাঁস অসুস্থ দেখাচ্ছে কিংবা জিমাইতেছে তাহলে সেই হাঁস কে আলাদা করে ফেলুন। কেননা অসুস্থ হাঁসের মাধ্যমে সুস্থা হাঁসের ক্ষতি হতে পারে।

ব্যবসার ধারনা #৩ – মোবাইল রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসা

আপনি যদি কম টাকা বিনিয়োগে তুলনামুলক বেশী টাকা আয় করতে চান তাহলে শুরু করুন মোবাইল রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসা। আমাদের দেশে চলমান যতগুলী ছোট ব্যবসা আছে এর মধ্যে এই ব্যবসায় লাভ বেশী ও ঝুঁকি কম।

মোবাইল রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসার উদ্দেশ্যঃ এই ব্যবসা মূলত কমিশন ভিত্তিক ব্যবসা। গ্রাহকের মোবাইলে টাকা রিচার্জ ও  মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিয়ে এই ব্যবসা করতে হয়। যত বেশী টাকা রিচার্জ ও  মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেওয়া যাবে তত বেশী আয় করা যাবে। সাধারনত প্রতি হাজারে ২৭ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়।

যেভাবে মোবাইল রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসা শুরু করবেন

মোবাইল রিচার্জ এর পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং এর সেবা আপনার গ্রাহকদের দিতে পারেন। নিজের দোকান না থাকলে ভাড়া নিতে পারে। একান্ত ভাড়া নিতে না পারলে যেখানে লোক সমাগম বেশী হয় সেখানে একটি চেয়ার ও টেবিল নিয়ে শুরু করতে পারেন এই ব্যবসা। যত দিন যাচ্ছে আমাদের দেশে মোবাইল ব্যাংকিংও অনেক বেড়ে যাচ্ছে।

আপনার মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসার মধ্যে অবশ্যই বিকাশ, রকেট, নগদ, ইত্যাদি সেবা রাখবেন। এবং মোবাইল রিচার্জ এর মধ্যে সব অপারেটরই রাখতে হবে। এবং ফলে আপনাকে প্রতিটি সেবার জন্য আলাদা আলাদা মোবাইল ফোনের দরকার হবে।

কম দামী ৮০০ থেকে ১০০০ টাকার মোবাইল দিয়েই আপনি এই ব্যবসায় কাজে লাগাতে পারবেন। সব মিলিয়ে আপনাকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বাজেট রাখতে হতে পারে (দোকান ছাড়া)

আমাদের দেশে বর্তমানে ৫টি মোবাইল অপারেট আছে। যথাক্রমে- গ্রামীনফোন, বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল ও টেলিটক। এই ৫ টির মধ্যে একমাএ টেলিটক বাংলাদেশের রাষ্ট্রয়াত্ত সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান।

আরো পড়ুন – ঘুমন্ত টাকা কি

আসুন দেখে নেই কোন কোম্পানির মোবাইল রিচার্জ থেকে কত টাকা আয় করা যায়! গ্রামীণফোন গ্রাহকদেরকে ১০০০ টাকা রিচার্জ করলে আপনি পাবেন ২৭ টাকা ৫০ পয়সা। ২৭ টাকা ৫০ পয়সা কমিশন পাবেন বাংলালিংক গ্রাহকদেরকে ১০০০ টাকা রিচার্জ করলে। একইভাবে এয়ারটেল দিবে আপনাকে ২৮ টাকা এবং রবি দিবে ২৭ টাকা ৫০ পয়সা। রাষ্ট্রয়াত্ত সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিটক বাংলাদেশ আপনাকে দিবে ৩০ টাকা প্রতি হাজার টাকা লোডে।

মোবাইল রিচার্জ ব্যবসা করে মাসে কত টাকা আয় করা যায়

আপনার ব্যবসার অবস্থান ও কত টাকা আপনি মাসে লোড করতে পারবেন তার উপর নির্ভর করে আপনি কত টাকা আয় করতে পারবেন। আপনা গ্রাহকের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে পারলে একই গ্রাহকের কাছে বার বার লোড বিক্রি করতে পারবেন।

এভারেজে ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন যদি আপনার লোকেশন ভাল হয়। এছাড়া mobile banking (বিকাশ, রকেট) থেকে ভাল টাকা আয় করা সম্ভব। অনেক ব্যবসায়ীর দাবি যদি প্রতি হাজারে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ টাকা কমিশন হতো তাহলে তারা তাদের ব্যবসা আরো ভালো ভাবে পরিচালনা করতে পারতেন। এটি এখন সময়ের দাবি।

সতর্কতা! এই ব্যবসা কম কমিশন দিলেও মোটামুটি লাভ খারাপ না। যতটুকু লাভ করা যায় তাই ধরে রাখতে হবে। এর জন্য কোন অবস্থায় বাকীতে মোবাইল লোড দিবেন না। তাছাড়া লোড দেওয়ার আগে অন্তত ২ বার নাম্বার মিলিয়ে নিন। তাড়াহুড়া করে ভুল নাম্বারে লোড দিয়ে নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনবেন না।

টাকা ছাড়া ব্যবসার ধারনা #৪ – বীমা বিক্রয় প্রতিনিধি- insurance agent

আপনি যদি টাকা ছাড়া ব্যবসা করতে চান তাহলে শুরু করুন বীমা বিক্রয় ব্যবসা। বীমা বিক্রয় প্রতিনিধি পেশাকে ব্যবসা বলছি এই জন্য যে, এটি একটি কমিশন ভিত্তিক ব্যবসা। নিদিষ্ট কোন বেতন নেই এই পেশায়। আপনি যা বিক্রি করবেন তার উপর কমিশন পাবেন। তবে মজার বিষয় হচ্ছে, আপনি যদি আজকে একটি কলম বিক্রি করেন তাহলে আপনার লাভ আপনি আজকেই পাবেন। ঠিক তো?

অপরদিকে আপনি যদি একটি বীমা বিক্রি করেন তাহলে এই লাভ আপনি অন্তত ২ বছর পাবেন। আপনার গ্রাহক বীমা কোম্পানিকে টাকা দিবে এবং আপনি সেই টাকার উপর একটি নির্দিষ্ট কমিশন পাবেন।

আর্থিক সুরক্ষার অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে বীমা। বাংলাদেশ, ভারত সহ সারা বিশ্বে বীমা বিক্রয় প্রতিনিধি পেশা আছে। বিশেষ করে আমাদের দেশে বীমা বিক্রয় করা অন্যতম কঠিন একটি কাজ। কারন বীমা এমন একটি পণ্যে যা আপনাকে বিক্রি করতে হবে, কিন্তু আপনি তা নিজেই দেখছেন না, এমনকি ধরতেও পারছেন না। তাহলে আপনি কি বিক্রি করবেন?

বীমা বিক্রয় প্রতিনিধি কি? আপনাকে বিক্রি করতে হবে বীমা চুক্তি। বীমা কোম্পানির সাথে গ্রাহকের চুক্তি যে করে থাকে তাকেই বীমা বিক্রয় প্রতিনিধি বলে।

জেনে নিন – নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসাবে বীমার গুরুত্ব

যেকারনে বীমা বিক্রয় প্রতিনিধি হবেন

  • প্রথমত এটি একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। আপনি যদি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পারেন যেখানে রয়েছে অফুরন্ত টাকা তাহলে আপনার জন্য আদর্শ পেশা বীমা বিক্রি করা।
  • আপনি চাইলে এই পেশাকে পার্ট-টাইম কাজ হিসাবে বেছে নিতে পারেন। কেননা এটি একটি স্বাধীন পেশা। আপনার নিজের প্রয়োজনেই আপনাকে কাজ করতে হবে। কেউ আপনাকে জোড় করতে পারবে না।
  • বিদেশ ভ্রমনের সুযোগ থাকে এই পেশায়।
  • সরকারী চাকুরির মত মেয়াদ শেষে পেনশন পাওয়ার সুযোগ আছে।
  • সারা দেশই আপনার জন্য কর্মক্ষেএ। আপনি চাইলে সারা দেশে ঘুরে ঘুরে এই কাজ করতে পারবেন। ফলে নির্দিষ্ট কোন অফিস টাইম বজায় রাখতে হয় না।

যেভাবে বীমা বিক্রয় করবেন

আমি আগেই উল্লেখ করেছি বীমা বিক্রয় কঠিন কাজ। আপনাকে বিক্রি করতে হবে চুক্তি। (বীমা কোম্পানির সাথে গ্রাহকের চুক্তি) নিন্মে বীমা বিক্রির জন্য কয়েকটি ধারনা ও টিপস দেওয়া হলো।

সুন্দর পোশাক। সুন্দর ও মার্জিত পোশাক সবাই ভালবাসে। একজন অপরিচিত মানুষ প্রথমেই আপনার যা দেখে থাকে তা আপনার পোশাক। মার্জিত পোশাক আপনাকে শুধু বীমা বিক্রয় করতে সাহায্য করবে তাই নয়, আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও সাহায্য করবে।

গ্রাহকের স্বার্থ সবার আগে। আপনাকে সফল বীমা বিক্রয় প্রতিনিধি হতে হলে গ্রাহকের স্বার্থ সবার আগে দেখতে হবে। আপনার লাভের কথা চিন্তা করে গ্রাহকে খুশী রাখতে হবে। এতে গ্রাহক অন্য কাউকে আপনার জন্য রেফারেন্স দিবে। ফলে আপনার বিক্রি আরো অনেক বেড়ে যাবে।

কথা বলার ধরন। মনে রাখতে হবে আপনি কি বলছেন তা গুরুত্ব বহন করছে, ঠিক তেমনি আপনি কিভাবে কথা বলছেন তা আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কথার মধ্যে কোন কমতি আছে কিনা তা যাচাই করে নিন।

মিথ্যা না বলা। কখনই মিথ্যা কথা বলে গ্রাহকে ঠকাতে যাবেন না। আপনার কোম্পানি যে সকল সুবিধা দিচ্ছে তাই বলুন, বাড়িয়ে কথা বলতে যাবেন না। কেননা মিথ্যা এক দিন না এক দিন প্রকাশ পাবেই।

বেশী কথা না বলা। অনেক সময় বেশী কথা বলা মানুষকে কেউ পছন্দ করেন না। যখন আপনি একজন বীমা প্রতিনিধি তখন আপনাকে অপ্রয়োজনীয় কথা এড়িয়ে যেতে হবে। গ্রাহকের কথা বেশী করে শুনুন, এবং আপনি শুধু প্রয়োজনীয় কথা বলুন।

বীমা পেশায় কত টাকা আয় করা যায়

বেশীরভাগ বীমা কোম্পানি কমিশন ভিত্তিতে তাদের কর্মীদের টাকা দিয়ে থাকে। তাই নিদিষ্ট করে বলা কঠিন। আপনি যত বেশী বীমা বিক্রি করতে পারবেন তত বেশী আয় করতে পারবেন এটাই সূত্র। তবে প্রথম ৬ মাসে খুব একটা আয় করতে পারবেন না। বড় টাকার গ্রাহক পেলে মাসে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা বা তারও বেশী আয় করতে পারবেন।

সতর্কতা! এমন কোম্পানি আপনি বেছে নিন যাদের অনেক অভিজ্ঞতা ও বাজারে সুনাম আছে। বেশী টাকা অফার করলেও নতুন কোম্পানিতে কাজ না করাই ভাল, কেননা তাদের বাজারে সুনাম অর্জন করতেই অনেক দিন লেগে যাবে। এছাড়া গ্রাহকের সাথে টাকা পয়সা লেনদেন খুব সতর্কতার সাথে করবেন। এই ব্যবসার মূল মন্ত্র – সততা, ধৈর্য, ও কঠিন শ্রম।