ব্যবসা শুরু করার আগে ব্যবসায়ের পরিকল্পনা কেন লিখবেন তার ১০টি কারন

ব্যবসায়ের পরিকল্পনা কেন লিখবেন তার ১০টি কারন

ব্যবসায়ের পরিকল্পনা কেন লিখবেন

ব্যবসায়ের পরিকল্পনা কেন লিখবেন

ব্যবসায়ের পরিকল্পনা আপনাকে ব্যবসায় সফল করতে পারে। যে কোন একটি ব্যবসার প্রথম ধাপ বিজনেস আইডিয়া খুঁজে বের করা। বিজনেস আইডিয়া পাওয়ার পর সেই আইডিয়াকে বাস্তবরূপ দেওয়ার জন্য আপনার চাই একটি লিখিত ব্যবসায়ের পরিকল্পনা। বিজনেস প্ল্যান ছাড়া ব্যবসা শুরু করা মানে গন্তব্য ও উদ্দেশ্য ছাড়া যাত্রা শুরু করা।

এছাড়া ব্যবসা যত কারণে ব্যর্থ হয় এর মধ্যে অন্যতম প্রধান কারন পরিকল্পনা না থাকা। আসুন জেনে নেই ব্যবসা শুরু করার আগে ব্যবসায়ের পরিকল্পনা কেন লিখবেন তার ১০টি কারন।  

১। ব্যবসার ধারনাটি পরীক্ষা করা – Examining business ideas

একটি লিখিত বিজনেস প্ল্যান আপনার ব্যবসাটি কতটুকু বাস্তবসম্মত ও লাভজনক তা পরীক্ষা করবে। কেননা ব্যবসা শুরু করার সকল ধাপ সমূহ একটি বিজনেস প্লানে লিপিবন্ধ থাকে, কোথায় কি সমস্যা থাকতে পারে এবং সেই সমস্যার সমাধান কি হতে পারে তা নির্ণয় করাই একটি ব্যবসায়ের পরিকল্পনা অন্যতম প্রধান কাজ।

২। নিজেকে মোটিভেট রাখা – Keep yourself motivated

ব্যবসা শুরু করার প্রথম দিন থেকে ব্যবসায় সাফল্য আসা পর্যন্ত এই সময়টা খুবই চ্যালেঞ্জিং। তাই এই সময়ে নিজেকে মোটিভেট রাখতে আপনার একটি বিজনেস প্ল্যান থাকা চাই। কেননা এতে আপনি বুজতে পারবেন আপনি কোথায় অবস্থান করছেন এবং আপনার গন্তব্য কোথায়।

৩। ব্যবসার লক্ষ্য নির্ধারণ – Setting business goals

একটি ব্যবসায়ের পরিকল্পনা সাধারনত দুই ধরনের লক্ষ্য থাকে, একটি স্বল্প-মেয়াদী লক্ষ্য এবং আরেকটি দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য। স্বল্প-মেয়াদী লক্ষ্যের মধ্যে থাকতে পারে আপনার ব্যবসা থেকে কখন প্রফিট পাওয়া শুরু করবেন।

এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যর মধ্যে থাকতে পারে আগামী ৫ বছরে আপনার ব্যবসাকে কোথায় দেখতে চান। তাই লক্ষ্য নির্ধারনে ব্যবসায়ের পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৪। প্রতিযোগিতাদের বুঝতে পারা – Understand the competition

ব্যবসায়িক পরিকল্পনা আপনাকে প্রতিযোগিতা বিশ্লেষণ করতে বাধ্য করবে। কোন প্রতিযোগি কিভাবে ব্যবসা করছে, কার কোথায় শক্তি ও দুর্বলতা রয়েছে, আপনি কিভাবে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবেন ইত্যাদি জানার সেরা উপায় ব্যবসায়ের পরিকল্পনা।

৫। গ্রাহকশ্রেনী বুঝতে পারা

আপনার ব্যবসায় অনেক ভাল পণ্য বা সেবা থাকতে পারে, তবে আপনি যদি গ্রাহকশ্রেনী নির্ণয় না করতে পারেন তবে ব্যবসাটি বেশীদূর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এখানে আপনার যদি একটি লিখিত ব্যবসায়ের পরিকল্পনা থাকে তাহলে সম্ভাব্য গ্রাহকশ্রেনী বুজতে পারবেন।

৬। আর্থিক প্রয়োজন নির্ধারণ করা।

ব্যবসায়িক পরিকল্পনার একটি প্রধান উদ্দেশ্য হ’ল আর্থিক প্রয়োজন নির্ধারণ করা। আপনার নির্ধারিত ব্যবসাটি শুরু করতে মোট কত টাকা লাগবে তা নির্ণয় করবে আপনার বিজনেস প্ল্যান।

এছাড়া আপনার কাছে কত টাকা আছে এবং কত টাকা আপনি লোন বা বিনিয়োগ খুঁজছেন তা জানানোর গ্রহনযোগ্য ও একমাএ উপায় লিখিত একটি পরিকল্পনা। কেননা একটি মানাইসই বিজনেস প্ল্যানই পারে বিনিয়োগকারীদের আপনার ব্যবসার প্রতি আগ্রহী করতে।

৭। মার্কেট রিসার্চ করা।

একটি বিজনেস প্লানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মার্কেট রিসার্চ করা। যে কোন ব্যবসায় সফলতা পেতে মার্কেট রিসার্চ করতেই হবে। আপনার পণ্য বা সেবার কতটুকু বাজারে চাহিদা থাকতে পারে তা জানার সেরা মাধ্যম হতে পারে মার্কেট রিসার্চ করা।

আপনি চাইলে দুই ভাবে মার্কেট রিসার্চ করতে পারেন, এক প্রাইমারি মার্কেট রিসার্চ ও সেকেন্ডারি মার্কেট রিসার্চ।

৮। বিজনেস পার্টনার পেতে ব্যবসায়ের পরিকল্পনা সাহায্য করে।

আপনি যদি আপনার ব্যবসার জন্য বিজনেস পার্টনার খুঁজে থাকেন তবে নিশ্চিত হতে হবে যে, আপনার একটি বিজনেস প্ল্যান রয়েছে।

কারন স্বাভাবিক ভাবেই মুখের কথায় হয়ত কেউ আপনার সাথে পার্টনারশীপে ব্যবসা নাও করতে পারে।

৯। মার্কেটিং প্ল্যান।

একটি পরিপূর্ণ ব্যবসায়ের পরিকল্পনায় মার্কেটিং অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিভাবে আপনার ব্যবসার প্রচার প্রচরনা করবেন তা ঠিক করতে আপনার একটি মার্কেটিং প্ল্যান থাকা চাই। এছাড়া মার্কেটিং বাবদ কত টাকা খরচ করবেন তা জানতেও আপনার এই প্ল্যান থাকতে হবে।

১০। ব্যবসা বিক্রি করতে বিজনেস প্ল্যান থাকা চাই।

সাধারণত ব্যবসায়িক পরিকল্পনাটি ব্যবসাটি বিক্রির একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনি যদি ভবিষ্যৎতে আপনার ব্যবসাটি বিক্রি করতে চান তবে এই বিজনেস প্ল্যান আপনাকে সাহায্য করবে, কেননা একটি প্লানে ঐ ব্যবসার সকল দিক উল্লেখ থাকে, যা সঠিক দামে পেতে আপনাকে সাহায্য করবে।   

কে এম চিশতি সিয়াম – ইউটিউব