কিভাবে বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরির ব্যবসা শুরু করবেন

বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরির ব্যবসা

বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরী ব্যবসা

বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরী ব্যবসা

বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরির ব্যবসা উৎপাদনমূলক লাভজনক ব্যবসার একটি। বাঁশ নিয়ে আগে হাঁসি-ঠাট্টা হলেও এখন আর তার সুযোগ নেই। কাঠের আসবাবপত্রের বদলে বাঁশের তৈরী আসবাবপত্র বিকল্প হিসাবে কাজ করতে পারে। বাঁশ দিয়ে বানানো আসবাবপত্রের দাম কম এবং ভাল ভাবে ট্রিটমেন্ট করে বানালে ২০ বছর স্থায়ীত্ব দেয়া সম্ভব।

যেখানে কাঠ দিয়ে বানানো খাটের দাম যদি ২০ হাজার টাকা হয় সেখানে বাঁশ দিয়ে বানানো খাটের দাম হবে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। কাঠের খাটটি বিক্রি করে যদি শতকরা ২৫ ভাগ লাভ হয় সেখানে বাঁশের খাটটি বিক্রি করে শতকরা ৩২ ভাগ লাভ করা যেতে পারে।

নিজেকে একজন স্বাবলম্বী ও মাঝারী মানের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরী ব্যবসাটি হতে পারে একটি যুগান্তকারী ব্যবসা ধারণা। কাঠের জিনিসপত্রের তুলনায় বাঁশের জিনিসপত্র কম টাকায় পাওয়া যায় বিধায় এটি একটি জনপ্রিয় ব্যবসা।

একটি ঘরের আসবাবপত্র যেমন: খাট, সোফা, ডাইনিং টেবিল, সাধারন টেবিল, চেয়ার, মোড়া, দোলনা ইত্যাদি সাধারনত কাঠ দিয়ে বানোনো হয়। এই একই আসবাবপত্র আবার বাঁশ ও বেত দিয়েও বানানো যায়। এক কথায় বলতে গেলে একটি বাসা সাজাতে যেসব আসবাবপত্রের প্রয়োজন হয় সে সকল জিনিসপত্র বাশঁ এবং বেত দিয়ে তৈরী করা যায়। এমনকি দেশীয় ডিজাইন ছাড়াও বিদেশি ডিজাইনের বাশেঁর তৈরী আসবাবপত্র বানিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন।

বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরির ব্যবসার অবস্থান

বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরির ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে দুইটি অবস্থান নিতে হবে। একটি কারখানার জন্য আর একটি শোরুম বা বিক্রয়কেন্দ্রের জন্য। যেখানে যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো এবং মানুষের চলাচল বেশি সেখানে এই ব্যবসাটি শুরু করা ভালো। বাজারে বা মার্কেটের পাশে একটি দোকানে এই ব্যবসাটি শুরু করা যায়। শোরুমের পিছনে বা নীচে কারখানা থাকলে পরিবহন খরচ লাগে না। বাড়িতেও এই ব্যবসাটি শুরু করা যেতে পারে। অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে আপনার ব্যবসার অবস্থান জানান দিতে পারেন।

কেন এই ব্যবসাটি শুরু করবেন

এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। সময়ের সাথে সাথে এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাশেঁর তৈরী আসবাবপত্র ব্যবসাটিতে ঝুঁকির পরিমান কম। এই জন্য অনেক তরুণ উদ্যোক্তা এই ব্যবসাটি শুরু করতে আগ্রহী। এই ব্যবসাটি বাড়ির নারীরাও করতে পারে। এটি একটি জনপ্রিয় ব্যবসা হিসেবে পরিচিত। অল্প টাকা বিনিয়োগ করে অনেক টাকা আয় করা যায় এই ব্যবসায়ের মাধ্যমে। ভালমানের আসবাবপত্র তৈরী করে বিদেশেও রপ্তানি করার সুযোগ রয়েছে।

সম্ভাব্য পুঁজি

এই ব্যবসাটি শুরু করতে হলে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করে নিতে হবে। তবে স্থানীয় প্রযুক্তিতে বানিয়ে নিতে পারলে ১৫ লাখ টাকায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। সব মিলিয়ে ২৫ লক্ষ টাকা হলে আপনি মোটামুটি বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র বানানোর ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

কিভাবে তৈরী করবেন

প্রথমে চাই একটি সঠিক বিজনেস প্ল্যান। বাঁশ কোথা থেকে কিনবেন, দাম কি রকম, বছরে সব সময় দাম একই রকম থাকে কিনা, কি জাঁতের বাঁশ আসবাবপত্র তৈরীর জন্য ভাল তা জানতে হবে।

বাঁশের তৈরী আসবাবপত্র তৈরী করতে প্রথমে মেশিনের মাধ্যমে বাঁশ কাটতে হবে। আসবাবপত্রের সাইজ অনুযায়ী বাঁশ কেটে খাট, সোফা, সাধারন টেবিল, ডাইনিং টেবিল, চেয়ার ইত্যাদি তৈরী করা হয়। বিভিন্ন ডিজাইনের নকশা দিয়ে আসবাবপত্র তৈরী করা হয়। পণ্যটিকে সুন্দর দেখাতে বিভিন্ন রং ব্যবহার করা যায়। এই ভাবে বাঁশের আসবাবপত্র তৈরী করা যায়।

বাজারজাতকরণ

বাজারে এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কাঠের তুলনায় বাঁশের তৈরী  আসবাবপত্রের দাম কম যার জন্য বেশির ভাগ মানুষ এই পণ্যটি কিনতে আগ্রহী। বিভিন্ন মেলায় আপনার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারেন। বিভিন্ন ফার্নিচার দোকানে এই পণ্যটি বিক্রি করে থাকে। শহরে এবং গ্রামাঞ্চলে এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

যোগ্যতা: পণ্যের বিভিন্ন রকম ডিজাইন করতে প্রশিক্ষনের প্রয়োজন রয়েছে। নিজে না পারলে দক্ষ কারিগর নিয়োগ দিতে হবে। উৎপাদন ও বিক্রি একই সাথে চালাতে হবে। তাছাড়া গ্রাহকের পছন্দের মত আসবাবপত্র বানিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা থাকতে হবে।

বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র ব্যবসায় লাভ কেমন – এই ব্যবসাটি করে বেশ ভালই লাভবান হওয়া যায়। এই ব্যবসাটি থেকে শতকরা ৩২ ভাগ লাভ বের করা সম্ভব।