১০টি নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসা ধারনা

১০টি নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসা ধারনা

১০টি নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসা ধারনা

১০টি নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসা ধারনা

নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসা বর্তমানে দ্রুত বর্ধমান একটি সফল ব্যবসা ক্ষেএ। আমাদের দেশে এখন যতগুলী সম্ভবনাময় ব্যবসা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসা। সারা বিশ্বব্যাপি যখন মানুষ অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা গ্রহন করছে তখন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সকলের জন্য অতন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা বর্তমানে আধুনিক পৃথিবীর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বিশ্বের সব আধুনিক ও সভ্য রাষ্ট্রসমূহ নিরাপত্তার ব্যাপারে খুব বেশি উদ্বিগ্ন। এমনকি প্রতিবছরই নিরাপত্তার জন্য একটি উচ্চমানের অর্থ ব্যয় করা হয়ে থাকে। অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদকে উৎপাটন করার জন্য বহু আর্ন্তজাতিক ও বেসরকারি সংস্থা বিশ্বব্যাপি কাজ করে যাচ্ছে।

বিশ্ব সভ্যতা যতই আধুনিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে দুষ্কৃতিকারীদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা তত বেড়েই চলেছে। এ জন্য আগের চেয়ে মানুষ ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সম্পর্কে আরো বেশি সচেতনতা অবলম্বন করছে। দিনে দিনে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসায় বিনিয়োগ ও আয়ের পরিমান দ্রুতহারে বেড়েই চলছে।

শুধুমাত্র ২০১৫ সালের পরিসংখ্যা অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বিনিয়োগের পরিমান ছিল ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। নিরাপত্তা ব্যবসা এমন একটি শিল্প, যা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য খুবই প্রয়োজন। ক্যারিয়ার গঠনের মাধ্যম হিসেবে নিরাপত্তা শিল্পে পরিধি ব্যাপক বড়। আপনি যদি উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন হয়ে থাকেন তাহলে নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসা শুরু করার জন্য নিচের ১০টি সিকিউরিটি বা নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসা ধারনা প্রদান করা হলো। আরো পড়ুন- ব্যবসা শুরু করার জন্য ১০ টি পরামর্শ

সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবসা

বর্তমানে সিসিটিভি ক্যামেরা সবজায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। দোকান কিংবা বাড়ী নিরাপত্তার অন্যতম মাধ্যম হিসাবে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবসা অন্যতম। সিকিউরিটি শিল্পে আগ্রহী উদ্রোক্তাদের জন্য এটি অত্যন্ত উপযোগী নতুন ব্যবসা ধরনা।

সিসিটিভি ক্যামেরা বর্তমানে ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তার অন্যতম প্রধান একটি ডিভাইস। এই ব্যবসাটি আপনি সিসিটিভি ক্যামেরা এবং অন্যান্য সিকিউরিটি গ্যাজেটগুলোর উপর অল্প কিছু প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষন গ্রহন করেই শুরু করতে পারেন।

যে কোনো উদ্যোক্তা অল্প মূলধনেই প্রাথমিক ভাবে এ ব্যবসাটি শুরু করে লাভবান হতে পারেন। দোকান ভাড়া নিয়ে এই ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। তাছাড়া অনলাইনেও সিসিটিভি ক্যামেরা বিক্রি করতে পারে। নতুন গ্রাহক পেতে বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন সাইটে গিয়ে আপনার পণ্য মার্কেটিং করতে পারেন। পড়ুন – ছোট শহরে যেভাবে ব্যবসা শুরু করবেন

নিরাপত্তা পরামর্শকারী

শিল্পায়নের এ যুগে বিশ্বব্যাপি অপরাধ প্রবণতা ও সন্ত্রাাসবাদ প্রকট আকার ধারন করেছে তাই নতুন ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য security consultant বা নিরাপত্তা পরামর্শকারী হতে পারে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ব্যবসাক্ষেত্রে।

সাইবার সিকিউরিটি-cyber security

সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানি মূলত একটি  আইটি সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থা। বর্তমানে আইটি খাতে অপরাধের মাত্রা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এতে করে আইটি খাতের সাথে যুক্ত বহু ব্যক্তি ও কোম্পানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। ব্যক্তিগত তথ্য হতে শুরু করে ব্যবসায়িক নানা গোপন বার্তাও ক্রমেই ইন্টারনেট হতে হাতিয়ে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা।

এ জন্য সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানির মাধ্যমে অনেকগুলো নিরাপত্তা সেবা প্রধান করা যেতে পারে। সকল তরুণ ও নতুন উদ্যোক্তারা সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ ক্যারিয়ার গঠনের জন্য লাভজনক এ ব্যবসাটি বেছে নিতে পারেন।

নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ

এটি নিরাপত্তা ব্যবসার একটি মৌলিক ধারণা। এজন্য উদ্যোক্তাদের নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। কোনো সম্প্রাদায় বা গোষ্ঠির নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং কোনো ব্যাংক বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত নিরাপত্তাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানদান করে এ ব্যবসাটি শুরু করা যেতে পারে। এ ব্যবসাটি শুরু করতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও লাইসেন্স প্রয়োজন। এ খাতে আয়ের পরিমান নেহায়েত মন্দ নয়।

লাইসেন্সড আর্মস ডিলার

এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসাক্ষেত্র। আপনি যদি সিকিউরিটি শিল্পে ব্যবসা শুরু করার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে একজন লাইসেন্সধারী অস্ত্র বিক্রেতা হিসেবে শুরু করতে পারেন। এ ব্যবসাটি শুরু করার জন্য আপনার প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো বৈধতার সনদপত্র হিসেবে লাইসেন্স সংগ্রহ করা। তাহলে আপনি এখাতে বিনিয়োগ করে বিপুল পরিমান আয় করতে পারেন।

Security Software Application – সিকিউরিটি সফটওয়্যার এপ্লিকেশন

আপনি একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার হয়ে থাকলে নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত সফটওয়্যার এপ্লিকেশনগুলো বানাতে ও বিক্রি করে নিরাপত্তা ভিত্তিক ব্যবসায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারেন । আপনি গ্রাহকদের জন্য উপযুক্ত সফটওয়্যার অ্যাপলিকেশন গুলো ডেভেলপ করে কাজটি করতে পারেন যা তাদের কে নিরাপদ রাখতে পারবে।

গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সিকিউরিটি ব্যবসা

সিকিউরিটি খাতে ব্যবসা শুরু করার জন্য গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন এর ব্যবসাটি আপনার জন্য হতে পারে একটি উপযুক্ত কর্মক্ষেত্র। এটি নিরাপত্তা শিল্পে অন্যতম লাভজনক ব্যবসাক্ষেত্র। আপনার এলাকার স্থানীয় লোকজনের গ্যাস ও পাইপলাইনগুলোর সংযোগ ও ক্রুটি মেরামত করে আপনি এ কাজটি শুরু  করতে পারেন। নি:সন্দেহে এর মাধ্যমে আপনি প্রচুর অর্থকড়ি কামাতে পারেন। বিনা পুঁজিতে নিজের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে এটি হতে পারে অন্যতম সেরা একটি আয়ের পথ।

ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা

আপনি নিরাপত্তা খাতে এ ব্যবসাটি প্রতিষ্ঠিত করতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে লাইসেন্স ও পারমিট সংগ্রহ করেই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। একটি বেসরকারী সংস্থা হিসেবে শুরু করে আপনি এমন ব্যক্তিকে নিরাপত্তা প্রধান করতে পারেন যারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মূল্যবান জিনিসপত্র, নগদ অর্থ ও মালামাল পরিবহন কওে থাকেন। এক্ষেত্রে পরিবহন কোম্পানি ও সংস্থাগুলো হতে পারে আপনার প্রধান গ্রাহক। এ ব্যবসাটি হতে পারে আপনার জন্য চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু আপনাকে আর্থিক ভাবে ধনী হতে সাহায্য করবে।

সিকিউরিটি দরজা বিক্রি

সিকিউরিটি দরজা বিক্রি ও লাগানো একটি অত্যন্ত লাভজনক ও সম্মানিত ব্যবসা ধারণা। আপনি যদি সিকিউরিটি শিল্পে ব্যবসা শুরু করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে ব্যাংক, অফিস, হোটেল, স্টেডিয়াম, বাড়ি ও যেখানে নিরাপত্তা দরজা ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক, সেসব স্থানে এগুলো সরবরাহ করে ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। তরুণ ও নতুন উদ্যোক্তাদের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য এটি হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসা।

বিদেশীদের নিরাপত্তা দিন

বিদেশী পর্যটকদের বিশেষ নিরাপত্তার গুরুত্ব অপরিসীম। আপনি সিকিউরিটি শিল্পে ব্যবসা শুরু করে পর্যটকদের নিরাপত্তা সেবা প্রদান করতে চাইলে আপনি নিরাপত্তা কর্মীদের ভাড়া করে ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারেন। বিশেষ করে আপনি ইংরেজী ও অন্যান্য দু একটি ভাষায় পারদর্শী লোকদের মাধ্যমে সেবাটি প্রদান করতে পারেন।