ক্রয়মূল্য থেকে কত টাকা কমলে প্রাইস এডজাস্ট করা উচিৎ

ক্রয়মূল্য থেকে কত টাকা কমলে প্রাইস এডজাস্ট করা উচিৎ

ক্রয়মূল্য থেকে কত টাকা কমলে প্রাইস এডজাস্ট করা উচিৎ

শেয়ার কেনার পর দাম কমলে আরো শেয়ার কিনে গড় মূল্য কমিয়ে আনা একটি কমন পদ্ধতি। আমাদের দেশে শতকরা ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জনই এই সিস্টেম ফলো করে। শুধু আমাদের দেশ না সারা বিশ্বে শেয়ার বাজারে একই অবস্থা।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কখন শেয়ারের দাম কমলে এভারেজ করা উচিৎ? এর শতভাগ সঠিক কোনো উত্তর হয় না। বিনিয়োগকারী ভেদে এক একজন এক একরকম কৌশল অনুসরন করে।

আমার কাছে সেরা কৌশল হচ্ছে, যখন আমি একটা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করব, শুরুতেই বেশি পরিমান কেনা ঠিক হবে না।

আমাকে ধরে নিতে হবে, আমি কেনার পর দাম কমবে, এবং ঐ কম সময়ে আমি ধীরে ধীরে শেয়ার সংখ্যা বাড়াব। এতে কিছু অসুবিধাও আছে যেমন ধরুন, আমি ABC কোম্পানির ১০০০০ শেয়ার কিনতে চাই, আমার টার্গেট ২ মাসে ১৫% প্রফিট করা।

এখন শুরুতেই যদি আমি ৫০০ বা ১০০০ শেয়ার কিনি এবং এর পর থেকে দাম বাড়া শুরু করে তবে তবে কাক্ষিত পরিমান শেয়ার আর কেনা হবে না। তাহলে ঐ ৫০০/১০০০ শেয়ারে যা লাভ হবে তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

শেয়ার বাজারে একটা বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে, এখানে আমরা লাভ বা প্রফিট করতে এসেছি, লোভ করতে না। তাই আমি কেনার পর সেই শেয়ারে দাম বেড়ে গেলে আর কিনতে পারব না এই ভেবে আমার কাক্ষিত প্রাইস থেকে বেশি দামে তাড়াহুড়া করা ঠিক হবে না।

এবার ধরুন, আমার কেনার পর দাম কমে গেল, আমার হাতে টাকাও আছে তাহলে আমি কখন সেই শেয়ার কিনে গড় মূল্য কমিয়ে আনব?

এটি মূলত নির্ভর করে কোন কোম্পানিতে আমি বিনিয়োগ করেছি এর উপর। অনেক সময় দেখা যায় যেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছি সেই কোম্পানির সবকিছু ঠিক আছে কিন্তু সামগ্রীক মার্কেট ডাউন থাকার কারনে দাম কমে যাচ্ছে, এই অবস্থায় আরো শেয়ার কেনা উত্তম।

তবে এখানেও সকল টাকা দিয়েই দাম এভারেজ করা ঠিক হবে না। ধরুন আমার ABC  কোম্পানিতে ১০০০ শেয়ার ২০ টাকা করে কিনলাম, আর এখন এর দাম ১৯.৮০ পয়সা।

যেহেতু আমার কাছে আরো অনেক শেয়ার কেনার টাকা আছে তাই ১৯.৮০ পয়সা দরে আরো ২০০০ শেয়ার কিনলাম, খালী চোখে কোনো সমস্যা নেই, তবে যদি ২ দিন পর এই দাম আরো ৩০ পয়সা কমে পাওয়া যায় তাহলে এখানে এই দামে কেনাই আমার জন্য মঙ্গল।

যত দাম কমবে আমার উচিৎ হবে শেয়ার এর পরিমান বাড়ানো, যেমন এবার যদি ১৯ টাকা চলে আসে এর দাম, তাহলে ৩০০০ শেয়ার কিনতে হবে, মূলকথা দাম যত কমবে আমার শেয়ারের ভলিউমও তত বাড়বে। এতক্ষন যা বলালাম তা হচ্ছে যারা শর্ট টাইমের জন্য বিনিয়োগ করে তাদের জন্য। এবার আসি লং-টাইম investment এ।

সাধারনত, লং টাইম বলতে ১ বছর বা এর অধিক সময়কে বুঝায়। যারা লং টাইমে বিনিয়োগ করতে চায় তাদের উচিত হবে ভালো ফান্ডামেন্টাল শেয়ার খুঁজে বিনিয়োগ করা। এবং কমপক্ষে যেই দাম দিয়ে শেয়ার কিনবেন তার দাম ১১% না কমা পর্যন্ত বিনিয়োগ না করা।

যখন আপনার ক্রয়কৃত শেয়ারের দাম ১১% কমবে তখন আরো শেয়ার কিনে গড়মূল্য কমাতে হবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, শেয়ার বাজারে কোনো দামই এর শেষ দাম না। আপনি যখন এই ১১% কমার পরে গড় করবেন এর পরেও সেই শেয়ার এর দাম আরো কমতে পারে, যদি কমে তাহলে সেই অবস্থায় আরো শেয়ার কেনার সক্ষমতা থাকতে হবে।

এছাড়া যখন আবার দাম কিছুটা বাড়বে তখন কিছু শেয়ার সেল দিয়ে কিছু প্রফিট টেক করে ক্যাশ টাকা হাতে রাখতে হবে আবার কমার জন্য। আরোও পড়ুন – শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ ভয় কাটিয়ে ওঠার কিছু উপায়

শেষ কথা, আপনার কেনা শেয়ারের দাম বাড়লে সেল দিবেন এবং কমলে আরো কিনবেন তবে  কখনোই হাতে থাকা টাকা একবারে শেষ করা যাবে না।