জেনে নিন কবুতর পালন পদ্ধতি ও শুরু করুন বাড়তি আয়

জেনে নিন কবুতর পালন পদ্ধতি

জেনে নিন কবুতর পালন পদ্ধতি ও শুরু করুন বাড়তি আয়

জেনে নিন কবুতর পালন পদ্ধতি ও শুরু করুন বাড়তি আয়

অল্প টাকা বিনিয়োগে মজাদার ব্যবসার করতে চাচ্ছেন? আপনি জানেন কি কবুতর পালন করলে বারো মাসে তের জোড়া কবুতরের বাচ্চা পাওয়া যায়? আমাদের দেশে অনেকেই হাঁস-মুরগির পাশাপাশি সখে কবুতর পালন করে থাকে। একটু বাড়তি পরিশ্রম ও নজরদারি করলে সহজেই একটি বাড়তি আয়ের মাধ্যম হতে পারে কবুতর পালন। কবুতর পালন করে যেমন আমিষের চাহিদা মেটানো যায়, তেমনি একটা সাইড বিজনেস বা বাড়িত আয়েরও সুযোগ পাওয়া যায়। কবুতরের মাংসের বাজারে ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে।

কেন শুরু করবেন কবুতর পালন ব্যবসা

  • কবুতর পালন আনন্দদায়ক ও ভাল সময় অতিবাহিত করার মাধ্যম।
  • কবুতরের মাংস খুবই পুষ্টিকর ও সুস্বাদু হওয়ায় রোগী ও বাচ্চাদের অন্য অনেক উপকারী।
  • প্রতি মাসে দুইটি করে বাচ্চা পাওয়া যায় ও ৩ সপ্তাহের মধ্যেই বাচ্চা বিক্রি করার উপযোগী হয়ে উঠে।
  • সাধারনত কবুতরের রোগ বালাই কম। তাই এই ব্যবসায় ঝুঁকিও কম।
  • খাবারের খরচ খুবই কম ও থাকার ঘর বানাতে বেশী খরচ ও কষ্ট হয় না।
  • কম টাকা বিনিয়োগে যে কেউ অল্প জায়গায় কবুতর পালন ব্যবসা শুরু করতে পারে।

কি জাতের কবুতর পুষবেন

সারা পৃথিবীতে কম হলেও ২৫০ জাতের কবুতর রয়েছে।  মাংস উৎপাদন করার জন্য সিলভার কিং, কিং টেক্সেনা, ডাউকা, কাউরা জাতের কবুতর উল্লেখযোগ্য। আপনি যদি চিত্তবিনোদনের জন্য কবুতর পালন করতে চান তাহলে সিরাজী, ময়ূরপঙ্খী, লাহোরী, গিরিবাজ জাতের কবুতর পুষতে পারেন। এদের দাম অন্য কবুতর থেকে বেশী ও চাহিদাও ভাল। এই জাতের কবুতর মূলত তাদের জন্য যারা সখ বসত কবুতর পুষেন। আমাদের দেশে সব থেকে বিখ্যাত জাতের কবুতর হজরত শাহজালাল (রঃ) এর স্মৃতি বিজারিত “জালালী” কবুতর চাইলে পুষতে পারেন।

কবুতরের জীবন চক্র

কবুতরের জীবনকাল প্রায় ১২ থেকে ১৪ বছর। এরা জোড়া বেঁধে আজীবন এক সাথে বাস করে। সাধারনত স্ত্রী পুরুষ উভয় এক সাথে খড়কুটা সংগ্রহ করে বাসা বানায় এবং সেই বাসায় ডিম থেকে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায়। কবুতর সাধারনত ২৮ দিন পর পর ৪৫ থেকে ৪৮ ঘন্টা ব্যবধানে দুইটি ডিম দেয়। আরো পড়ুন – ছাগল পালন ব্যবসা শুরু করার ১৩ টি কারন

স্ত্রী ও পুরুষ কবুতর উভয় পালা করে ডিমে তা দেয় এবং বাচ্চা ফুটাতে প্রায় ১৭ দিন সময় লাগে। বাচ্চা ফুটানোর পরে কবুতর তাদের বাচ্চাদের ১০ দিন পর্যন্ত ঠোঁট দিয়ে খাবার খাওয়ায়। বাচ্চার বয়স যখন ১০ দিন বা তার বেশী হয় তখন বাচ্চা নিজে নিজে খাবার খাওয়া শুরু করে।  কবুতরের জীবন চক্র অন্যসব পাখী বা প্রানীদের থেকে অনেক আলাদা।

যেভাবে কবুতরের বাসস্থান বানাবেন

কবুতর পালন শুরু করতে হলে প্রথমেই আপনার পছন্দের জাত নির্বাচন করতে হবে এবং তারপর চাই সঠিক বাসস্থান নির্মাণ।

  • কবুতরের ঘর মাটি থেকে উচু জায়গায় বানাতে হবে, কমপক্ষে ৪ ফুট উঁচুতে।
  • ঘরটি এমন ভাবে বানাতে হবে যেন কোন ক্ষতিকর পোকামাকড় ও অন্য পাখিদের লাগালে না থাকে।
  • আলো বাতাস যেন ঘরে ঢুকতে পারে সেই ব্যবস্থা থাকতে হবে।
  • বৃষ্টির পানি ঘরে যেন প্রবেশ না করতে পারে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • হালকা টিন, বাঁশ, বেত কিংবা শক্ত ফলের কাটুন দিয়েও ঘর বানিয়ে দিতে পারেন।
  • প্রতি জোড়া কবুতরের জন্য ৩০ সেঃমিঃ উচ্চতা ও ৩০ সেঃমিঃ চাওয়া করে খোপ বা কবুতরের বাসস্থান বানাতে হবে।
  • পানি ও খাবার দেওয়ার জন্য পাএ খোপের সামনে কাছাকাছি রাখতে হবে। তাছাড়া খোপের কাছেই কিছু খড়-কুটার ব্যবস্থা রাখতে পারেন।

কবুতরকে কি খেতে দিবেন

কবুতর সাধারনত শস্যদানা জাতীয় খাবার যেমন বিভিন্ন জাতের ডাল, চাল, ধান, কাউন ইত্যাদি খায়। মুক্ত পরিবেশে কবুতর পালন করলে এদের তেমন খাবার দিতে হয় না, নিজেরাই নিজেদের খাবার খুঁজে নেয়। তবে এক বেলা সকালে খাবার দিতে হয়। আটকা জায়গায় কবুতর পালন করলে খোপের সামনেই খাবার দিয়ে রাকতে হবে। একটি পূর্ণবয়স্ক কবুতর প্রতিদিন গড়ে মাএ ৪০ গ্রাম খাবার খায়।