শেয়ার বাজারে দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ বলতে কি বোঝায়

শেয়ার বাজারে সফলতার খাঁটি সূত্র

শেয়ার বাজারে দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ বলতে আসলে কি বোঝায়

আপনি প্রায় শুনে থাকবেন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে হলে দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগের সর্বনিম্ন সময় কাল ১ বছর এবং সর্বোচ্চ সময় অনন্তকাল।

শেয়ার বাজারে দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ করার ২টি প্রধান কারন আছে। একটি অধিক পরিমানে লাভ করা এবং অন্যটি বিনিয়োগকৃত টাকার রিস্ক বা ঝুঁকি কমানো। তবে মনে রাখতে হবে, দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ মানে এই না যে লাভ হবেই এবং রিস্ক কমে যাবে।

শেয়ার ব্যবসার সফলতা নির্ভর করে মূলত ৩টি প্রশ্নের উপর। এক, আপনি কোন শেয়ারে বিনিয়োগ করবেন। দুই, কখন বাজারে ঢুকবেন, অর্থাৎ কোন শেয়ার কত দামে কিনবেন। তিন, কখন বের হবেন অর্থাৎ কোন শেয়ার কত দামে বিক্রি করবেন।

শেয়ার বাজারে সফলতার খাঁটি সূত্র এখনো আবিষ্কার হয়নি। তবে সাধারন চোখে সফলতার একটি সূত্র আছে। সূত্র হচ্ছে- বাই, হোল্ড এবং সেল।

এর মানে দাড়ায় একটি শেয়ার কিনবেন, দাম বাড়ার জন্য অপেক্ষা করবেন, এবং দাম বাড়ার পর বিক্রি করে দিবেন।

এখানে মূল বিষয় হচ্ছে, কোন কোম্পানির শেয়ার কিনব, কত দিন অপেক্ষা করব এবং কত দিন পরে বিক্রি করব।

এই বিষয়টি সফলতার সাথে করার জন্য আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগে আসতে হবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ এর চেয়ে আরেকটা বিষয় বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, পরিকল্পনা করা। তবে মনে রাখতে হবে, পরিকল্পনায় ভুল হলে এর ফলাফলও ভুল আসতে বাধ্য।

আসুন একটি উদাহরন দিয়ে কথা বলি। মিস্টার আব্দুর রহমান শেয়ার বাজারে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করতে এসেছে। ধরে নিলাম সে শুধুমাত্র একটি কোম্পানিতেই দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ করবে যার আনুমানিক সময় কাল দেড় বছর।

ABC কোম্পানির ৫০০০ শেয়ার ১০০ টাকা দামে সে কিনেছে।  অর্থাৎ, তার বিনিয়োগ করা শেষ।

এবার এক মাস পরে সেই শেয়ারের দাম হলো ৯০ টাকা,  মিস্টার আব্দুর রহমান চুপচাপ বসে আছে, আবার ১ মাস পরে দাম হলো ১০০, মিস্টার আব্দুর রহমান চুপচাপ বসে আছে। ১ মাস পরে দাম হলো ১২০ টাকা, এবারো সে কোন ধরনের বেচা/কেনা করল না।

এর ২ মাস পরে সেই শেয়ার দাম হলো ১৪০ টাকা মিস্টার আব্দুর রহমান এখনো বসে আছে।

এর এক মাস পরে ABC কোম্পানির শেয়ারের দাম হলো ১৩০ টাকা, এবারো কোন কেনা বেচা নেই। এর দুই মাস পরে শেয়ারের দাম হলো ১৫০ টাকা, তাও কোন কেনা বেচা নেই। এর দুই মাস পরে দাম কমতে শুরু করলো, এবার দাম হলো ১২০ টাকা, এর এক মাস পরে দাম হলো ১০০ টাকা। দেড় বছরের শেষ মাসে দাম হলো ৯০ টাকা।

এখন মিস্টার আব্দুর রহমান কি করবে? তিনি তো দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ করেছিলেন কিন্তু দেড় বছর পরে তার ১০০ টাকার শেয়ারের দাম হলো ৯০ টাকা।

তাহলে এই দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগের কি কোন মূল্য আছে? এর সহজ উত্তর নেই।

এই অবস্থায় মিস্টার আব্দুর রহমানের একটি পরিকল্পনা নিয়ে ব্যবসা করা উচিত ছিল। যেমন তাকে একটা টার্গেট মাথায় রেখে ব্যবসা করতে হবে।

এই রকম হতে পারে, আমি ৫ লাখ টাকা দেড় বছরের জন্য বিনিয়োগ করব, যখনই আমি ৩০% প্রফীট পাব তখনই আমি শেয়ার সেল করে দিব।

এটা হতে পারে ২ মাস পর কিংবা ১ বছর পর। এই শেয়ার সেল করার পর আমি আবার নতুন করে পরিকল্পনা করে আবার বিনিয়োগ করব।

আরো পড়ুন-

একই সাথে ৫ লাখ টাকা দিয়ে একসাথে না কিনে ধাপে ধাপে কেনার চেষ্টা করব, কেননা দাম কমলে বেশি পরিমানে কেনা যেতে পারে, একই সাথে কোম্পানির কোন খারাপ নিউজ এ স্টপ লসও মাথায় রাখতে হবে।

পরিশেষে, আমরা বলতে পারি শেয়ার বাজারে সফলতার জন্য দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগের পাশাপাশি পরিকল্পনা আমাদেরকে সফল করতে সাহায্য করবে। ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল – Bangla Preneur YouTube Channel