প্রত্যাখান ও ব্যর্থতার ভয় কাটিয়ে উঠার সেরা পরামর্শ
প্রত্যাখান ও ব্যর্থতার ভয় কাটিয়ে উঠার সেরা পরামর্শ

প্রত্যাখান ও ব্যর্থতার ভয় কাটিয়ে উঠার সেরা পরামর্শ
অনেকেই প্রত্যাখাত হওয়ার শক্তিশালী ভয় অনুভব করে থাকেন। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে প্রত্যাখাত বা ব্যর্থতার ভয় কোন কিছু দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয় না। এটি প্রতিটি মানুষের জীবনের একটি অনিবার্য দিক মাত্র।
অনেক বিশেষজ্ঞ এটিকে সাফল্যের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তবে সফল হতে হলে অবশ্যই প্রত্যাখাত ও ব্যর্থ হওয়ার ভয় পরাস্ত করতে হবে। এখানে আমরা কি কি উপায়ে সহজে প্রত্যাখাত ও ব্যর্থতার ভয় কাটিয়ে উঠা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করব। নিচে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ব্যর্থতার ভয় কি ?
প্রতিটি ব্যক্তিরই কোন প্রকল্পের সফলতা, পরীক্ষা, সাক্ষাৎকার, সম্পর্ক বা অন্য কোন উপাদান নিয়ে কিছু সন্দেহ থাকে। যদি অবস্থা চরম আকার ধারণ করে এবং প্রত্যাখানের ভয় আমাদের মন ও আবেগকে জয় করে তাহলে এটি এটিচিফোবিয়া নামে পরিচিত। যদি কোন কাজে ব্যর্থ হয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে ভয় আরো চরম আকার ধারণ করতে পারে।
ব্যর্থতার ভয়ের বহু কারণ থাকতে পারে। উদাহরণস্বরুপ, কিছু মানুষের এই জাতীয় ভয় অসমর্থিত ও সমালোচক পিতামাতার কারণে বিকশিত হয়। যদি পিতামাতা তাদের সন্তানদেরকে শৈশব থেকে বিভিন্ন ভাবে অপমান করে থাকেন তবে তা তার মধ্যে নেতিবাচক অনুভূতি তৈরি করে।
প্রত্যাখান ও ব্যর্থতার ভয় কাটিয়ে উঠার উপায়ঃ
১. ভয়ের প্রকৃত বাস্তবতাটি গ্রহণ করুন
আপনি যে ব্যর্থতাকে ভয় পান সেটি স্বীকার করা অপরিহার্য। এই সমস্যাটির তীব্রতা আপনার মধ্যে কতটা বিদ্যমান তা কোন ব্যাপার নয়। তবে আপনি যদি স্বীকার করতে পারেন তাহলে তা আপনাকে সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
২. ভয়ের কারণটি জানার চেষ্টা করুন
ব্যর্থতার ভয়কে জয় করতে হলে সর্বাগ্রে ভয়ের কারণটি জানা অত্যন্ত অপরিহার্য। স্কুলের প্রথম দিন অথবা শৈশবে অথবা নেতিবাচক পারিবারিক পরিবেশের কারণে কিংবা চাকুরীর প্রথম দিন আপনার এই ভয়টি শুরু হতে পারে।
তাছাড়া জীবনের যে কোন অস্বস্তিকর পর্বের কারণে এই ভয়টি বিকশিত হতে পারে। তাই যদি আপনি বুঝতে পারেন যে এই ভয়টি কখন থেকে শুরু হয়েছে তাহলে তা জয় করা সহজ হবে।
৩. সমস্যাটি লিখে রাখুন
আপনি যদি সমস্যাটি বিশ্লেষণ করতে চান তাহলে আপনাকে সমস্যাটি সঠিক ভাবে সংজ্ঞায়িত করতে হবে। আর ভালো ভাবে সংজ্ঞায়িত করতে হলে সমস্যাটি কাগজে লিখে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ কেন আপনি ভয় পেয়েছেন সেটি সেই মহূর্তে লিখে রাখা বাঞ্ছনীয়। আর এর ফলে সমস্যাটি ভালো ভাবে সংজ্ঞায়িত করা যাবে।
৪. প্রত্যাখানকে আপনার জীবনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করুন
প্রত্যেককেই তার জীবনে এক বা একাধিক বার প্রত্যাখানকে সহ্য করতে হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে সফল মানুষরাও জীবনে কোন না কোন সময় প্রত্যাখাত হয়েছেন। তাই আপনাকে প্রত্যাখাত হওয়াকে জীবনের একটি অংশ হিসেবে মেনে নেওয়া উচিত।
৫. বাস্তব ভিত্তিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
ব্যর্থতার ভয়কে জয় করার আরেকটি কার্যকরী ও সহজ উপায় হলো জীবনের বাস্তব ভিত্তিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা। বাস্তব ভিত্তিক লক্ষ্য নির্ধারণ করে সে লক্ষ্যে অটল থাকাও অত্যন্ত জরুরী।
৬. নিজেকে বলুন যে এটিই শেষ নয়
ব্যর্থতার ভয়কে জয় করার আরেকটি কার্যকরী উপায় হলো ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনি কিছুই জানেন না তা বুঝতে পারা। এক বার প্রত্যাখাত হলেই মনে করবেন না যে এটিই শেষ। বরং সফল হওয়ার আগ পর্যন্ত চেষ্টা করার জন্য মনস্থির করুন।
আরো পড়ুন – ঘুমন্ত টাকা বনাম জীবিত টাকা
৭. আপনার অনুভূতি ও হৃদয়কে শোনার চেষ্টা করুন
আপনার সিদ্ধান্ত গুলো সঠিক কিনা অন্যের অনুমোদনই তা নিশ্চিত করবে না। বরং নিজের আবেগ অনুভূতি গুলোকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করুন। আপনার মন কি বলে তা শোনার চেষ্টা করুন।
৮. প্রত্যাখানকে শিক্ষা হিসেবে মেনে নিন
প্রত্যাখানকে জীবনের একটি বড় অধ্যায় হিসেবে গ্রহণ করুন। আপনার ত্রুটি গুলো কি ছিলো তা যাচাই করুন। ত্রুটি গুলো বিশ্লেষণ করে তা থেকে কিভাবে শিক্ষা গ্রহণ করা যায় তা নিয়ে ভাবুন। এর ফলে আপনি আরো সামঞ্জস্যপূর্ণ ও দক্ষ হয়ে উঠতে পারবেন।