জীবন বীমার কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
জীবন বীমার কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

বাংলাদেশে জীবন বীমা – জীবন বীমার কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
আমাদের দেশে অনেক দিন থেকে জীবন বীমা থাকলেও মানুষের মধ্যে সচেতনা কম ছিল। বর্তমানে দিন দিন বাংলাদেশে জীবন বীমার গরুত্ব এবং চাহিদা দেড়ে যাচ্ছে। আজকের এই লেখায় তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ১০টি জীবন বীমার বিষয় নিয়ে আলোচলা করব।
১। পলিসি সমর্পন বা প্রত্যাপন:
পলিসির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে পলিসি গ্রহিতা পরবর্তী সময়ের জন্য পলিসি না চালানো বা বন্ধ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করাই পলিসি সমর্পন বা প্রত্যাপন। সাধারণত দুই বছরে মধ্যে পলিসি প্রত্যাপিত হলে কোন প্রত্যাপন মূল্য বা ক্ষতিপুরণ পাওয়া যায় না। দুই বৎসর অতিক্রান্ত হলে যে কোন সময় পলিসি সমর্পন করিলে কিছু ক্ষতিপূরণ পেতে পারে। সেই ক্ষতিপুরণ মোট জমাকৃত প্রিমিয়ামের চেয়ে কম। প্রত্যাপন মূল্য ক্যাশ ভ্যালুর উপর নির্ভর করে। কোন কোন কোম্পানীর বছর ভিত্তিক ক্যাশ ভ্যালুর তালিকা পলিসি ডকুমেন্টে উল্লেখ থাকে। আংশিক প্রত্যাপন করা যায় না।
২। দাবী না করার জন্য বোনাস:
কিছু বীমা পলিসিতে দাবী না হলে বা বীমার নিদৃষ্ট সময় পার হয়ে গেলে দাবী না করার কারনে বীমা কৃত অংকের একটি অংশ বোনস হিসাবে দেয়া হয়। যাহা ঘঙ ঈখঅওগ ইঙঘঅঝ হিসাবে পরিচিত। কোম্পানী কখনো বোনাস নগদ বা চেকের মাধ্যমে প্রদান না করে ঐ রুপ পলিসি নবায়নের ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম হিসাবে সমন্বয় করে থাকে।
৩। বীমা পলিসিতে মনোনীত ব্যক্তি:
জীবন বীমা পলিসিতে মনোনীত হিসাবে যারাই অন্তঃভুক্ত থাকবে তারাই উত্তরাধিকারী হিসাবে গণ্য হবে এবং বীমাকারীর সমুদয় অর্থ সুবিধা পাবে। অন্য কেউ প্রাপ্য অর্থের অংশীদার বা ভাগ পাবে না।
৪। প্রিমিয়াম মওকুফ:
বীমা গ্রহিতার র্দুঘটনা ও অসুস্থতা জনিত কারণে স্থায়ী শারিরীক অক্ষমতা প্রিমিয়াম মওকুফ সুবিধা। এ ক্ষেত্রে বীমা গ্রহিতার মৃত্যু বা পলিসির মেয়াদ শেষ না পর্যন্ত পলিসি চালু থাকে। যদি পলিসিতে প্রিমিয়াম মওকুফ সুবিধা নেওয়া থাকে।
৫। অক্ষমতা:
বীমা গ্রহিতার দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার কারণে নিজ পেশা পরিচালনায় সম্পূর্ন ও স্থায়ী অক্ষম থাকে পেশায় মৃত্যু বলা হয়ে থাকে। পেশায় মৃত্যু স্থায়ী অক্ষমতা। এ ছাড়া অক্ষমতা আংশিক, সাময়িক বা সম্পূর্ন হতে পারে।
৬। তামাদি বা ল্যাপস পলিসি পূর্ন বহাল:
যথা সময়ে পলিসির প্রিমিয়াম পরিশোধ না করিলে পলিসি ল্যাপস বা তামাদি হয়ে যায়। তামাদি বা ল্যাপস পলিসি পুনরায় চালু করার প্রাক্কালে প্রথম পলিসি নেয়ার সময় পলিসি গ্রহনের প্রমানাদি সহ বীমাযোগ্য স্বার্থের উপর ভিত্তি করে অবলিখক পলিসি পূনঃ বহাল করে থাকেন। পলিসি পূণঃবহালের ক্ষেত্রে নিদ্দিষ্ট সময়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
৭। বীমা যোগ্য স্বার্থ:
জীবন বীমা পলিসিতে বীমা যোগ্য স্বার্থ আইন দ্বারা পরিচালিত। যাহা কতিপয় নির্ধারিত ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ। বীমা যোগ্য স্বার্থ রক্ষা হলে আর্থিক লাভবান এবং নষ্ট হলে আর্থিক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
৮। পলিসি লোন
পলিসিতে সমর্পন মূল্য (ঝটচজঊঘউঊজ ঠঅখটঊ) অর্জনের ভিত্তিতে পলিসি লোন প্রদান করা হয়। পলিসির বর্তমান মূল্যই সমর্পন মূল্য কোম্পানী সমর্পন মূল্যের ৯০% পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকেন।
৯। প্রিমিয়াম
বীমা গ্রাহক কোম্পানীর সাথে চুক্তিবদ্ধ বীমার বিপরীতে যে পরিমান অর্থ মাসিক/ পাক্ষিক / বাৎসরিক ভিত্তিতে প্রদান করতে সক্ষম হয় তাহাকে প্রিমিয়াম বলে।
১০। অতিরিক্ত ঝুঁকির জন্য প্রিমিয়াম:
বীমাকারীর পেশাগত কারণে যেখানে অতিরিক্ত ঝুঁকি পরিলক্ষিত হয় এবং মৃত্যুর হার সাধারণ হারের চেয়ে বেশি সেই সকল ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম হারের উপর অতিরিক্ত প্রিমিয়াম ধায্য করা হয়। যেমন:- অতিমাত্রায় ডায়াবেটিক রোগী, ধুমপান যুক্ত ব্যক্তি, লিফটে বা কনিতে কার্যরত ও অন্যান্য বিপদজনক পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঝুঁকি পরিলক্ষিত হয়।