মেয়েদের জন্য ঘরে বসে টাকা আয় করার উপায়
মেয়েদের জন্য ঘরে বসে টাকা আয় করার উপায়

মেয়েদের জন্য ঘরে বসে টাকা আয় করার উপায়
আমরা সবাই চাই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে চাই প্রিয়জনের মুখে হাঁসি ফোঁটাতে, নিজের সখ পূরণ করতে। নিজের টাকার খরচ করার আনন্দই আলাদা।
ছেলেদের মত মেয়েদেরও সখ থাকে বা ইচ্ছে থাকে নিজে উপার্জনের করার, কিন্তু সংসারের চাপে সেটা হয়ে ওঠে না। যদিও এখন মেয়েরা অনেক এগিয়ে গেছে, ভবিৎষতে আরো এগিয়ে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা করি। কিন্তু বাংলাদেশের এখনও অনেক নারী সরাসরি উপার্জনের সাথে যুক্ত নয়।
পরিবারের জন্য তাদের এই আত্মত্যাগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। তবু তাদের মনেও থাকে সুপ্ত অনেক স্বপ্ন। সারাদিনের কাজের ফাঁকে হয়তো ২/৩ ঘন্টার বেশি তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।
এই ২/৩ ঘন্টাই কি আসলেই আয় করা সম্ভব? চেষ্টা থাকলে সবই সম্ভব। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আপনি দিনে ২/৩ ঘন্টা সময় দিয়েও চাইলে আয় করতে পারবেন। তবে আপনাকে অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে। তাহলেই সফল হতে পারবেন।
বাবার বা স্বামীর অনেক টাকা থাকলেও নিজের কিছু করার ইচ্ছে থাকলে সেটাকে নিয়ে গর্ববোধ করুন। আপনি নিজে কিছু করতে চাইছেন এটাই বড় কথা।
যার যার আমল নামা যেমন তার তার, তেমনি আপনার অর্জনও কিন্তু একান্তই আপনার। সংসারে ৯-৫ টার অফিস সময় ধরা থাকে না বলে সারাদিনই কাজ আর কাজ।
সকাল থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত হাজারটা কাজ। কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখুন তো, আপনি চাইলে এই ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২/৩ ঘন্টা সময় বের করতে পারবেন না? নিজের স্বপ্ন পূরনের জন্য ২/৩ ঘন্টা সময় দেওয়াটা আমাদের দায়িত্ব।
প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হলেও একদিন সফলতা আসবেই। পৃথিবীতে কিছুই যেমন সহজে পাওয়া যায় না, ঠিক তেমনি কিছুই অসম্ভবও নয়।
মাত্র ২/৩ ঘন্টা? পাগল নাকি? ২/৩ ঘন্টাই আয় করা সম্ভব? উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ সম্ভব।
চেষ্টা থাকলে কিছুই অসম্ভব নয়। তবে আপনাকে অব্যশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, লেগে থাকতে হবে। প্রতিটি মিনিটকে মূল্যায়ন করতে হবে। তাহলেই আপনি পারবেন।
যিনি ৯-৫ টা কোথাও সময় দিচ্ছেন, তার সাথে তুলনায় গেলে আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন। তাই কারো সাথেই নিজের তুলনা করবেন না।
আপনিই আপনার প্রতিযোগী। গৃহিনীদের সারাদিনের কাজের ফাঁকে, স্বামী সংসার, সন্তান সামলে কষ্ট হলেও নিজেদের জন্য কিছু করা উচিত।
যাদের মনে এই ইচ্ছে আছে, আমরা তাদের স্বাগত জানাই। আজ আমরা কথা বলব, কিভাবে একজন মেয়ে দিনে মাত্র ২/৩ ঘন্টা ব্যয় করে আয় করতে পারবেন।
১। কনটেন্ট রাইটিং
আপনি যদি লিখতে ভালবাসেন তবে লেখালেখির মাধ্যমেও কিন্তু আয় করতে পারেন। আমাদের দেশে এখন অনেক কনটেন্ট রাইটিংয়ের সুযোগ আছে।
চাইলে এই বিষয়ে একটি কোর্স করে আপনি নিজেকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলতে পারেন। সাধারণত অনলাইনেই এইসব লেখা দেওয়া হয় বা নেওয়া হয়।
পেমেন্টও ব্যাংক একাউন্ট বা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে দেওয়া হয়। সুতরাং আপনাকে কোথাও যেতে হচ্ছে না।
আপনি বাসায় বসেই আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন, নিজের সুবিধামতো সময়ে, সকাল বা বিকাল, কিংবা রাতে আপনার অবসর সময়ে আপনি এই কাজ করতে পারেন। তবে সময় মতো লেখা দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে লেখাটি পাঠাতে হবে। সময়ের দাম এক্ষেত্রে অনেক। আপনি যদি ভাল মানের লেখা সময় মতো দিতে পারেন তাহলে আপনার কাজের চাহিদা বেড়ে যাবে, নিয়মিত কাজ পাওয়ার নিশ্চয়তা বাড়বে।
২। ইউটিউব
আয়ের একটি চমৎকার মাধ্যম ইউটিউব। আপনি যে বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয় নিয়েই একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরী করতে পারেন। এক্ষেত্রে আয় হতে একটু লাগলেও, ভাল কনটেন্ট তৈরী করতে পারলে দিনদিন আয় বাড়বে।
আবার একটি ভিডিও থেকে যে একবারই আয় হবে, এমন না। একটি ভিডিও আপনার একটি সম্পদ। সুতরাং এক ভিডিও থেকেও বারবার আয় করা সম্ভব।
আপনার যে বিষয় ভাল লাগে, সেই বিষয় নিয়েই কাজ করুন। রান্না ভাল পারলে রান্নার চ্যানেল, সেলাই বিষয়ক, ঘোরাঘুরি সহ অনেক বিষয়েই আপনি কাজ করতে পারবেন।
আরোও পড়ুন –
- ইউটিউব চ্যানেল ব্যর্থ হয় কেন
- ইউটিউব চ্যানেল থেকে কত টাকা ইনকাম করা যায়
- নতুন ইউটিউব চ্যানেল খোলা কতটুকু সম্ভবনাময়
৩। কোন প্রতিষ্ঠনের সাথে চুক্তিভিত্তিক কাজ করে
আপনি হয়তো চমৎকার কেক বানাতে পারেন, কিংবা স্ন্যাকস জাতীয় খাবার। তাহলে আশেপাশের বেকারি বা শপের সাথে যোগাযোগ করুন।
খাবার ভাল হলে এবং কাস্টমারের চাহিদা থাকলে দোকান থেকেই আপনার খাবার নিয়ে যাবে। আপনাকে কোথাও যেতে হবে না।
ঘরে বসেই আপনি আয় করতে পারবেন। একই ভাবে হাতের কাজের বিভিন্ন পণ্যও কিন্তু এভাবে আপনি বিক্রি করতে পারেন, আয় করতে পারেন।
৪। অনলাইন বিজনেস
বর্তমানে আয়ের আরো একটি আকর্ষনীয় মাধ্যম হল অনলাইন বিজনেস। যদিও এখানে আপনাকে মাত্র ২/৩ ঘন্টা দিলে হবে না। কাস্টমারের ম্যাাসেজের রিপ্লাই তাড়াতড়ি দিতে হবে।
তবে সারাদিনের কাজের ফাঁকে একটু চেষ্টা করলে এই ব্যবসা, আপনাকে তাড়াতাড়ি সফলতা এনে দিতে পারবে। কোন ভাবেই কোয়ালিটি নিয়ে কোন কম্প্রমাইজ করবেন। ডেলিভারি ম্যান থাকলে অথবা বেশ কিছু কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি বাসা থেকেও আপনার প্রোডাক্ট নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং অনলাইন বিজনেসও করতে পারেন।
৫। শেয়ার বাজার
শেয়ার বাজার নিয়ে আমাদের অনেকেরই অনেক নেতিবাচক সব ধারণা আছে। তবে খুবই অল্প সময় ব্যয় করে আয়ের একটি ভাল উৎস হতে পাওে শেয়ার বাজার। শুধু মাত্র বিও একাউন্ট খুলতে আপনাকে যেতে হবে।
মোবাইল এ্যাপের মাধ্যমে আপনি যেকোন জায়গা থেকে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন। আবার টাকাও আপনার ব্যাংক একাউন্টে চলে যাবে। সু
তরাং দিনে মাত্র ১ থেকে ১.৫ ঘন্টা সময় ব্যয় করে আপনি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ একথা সত্য। তবে জেনে বুঝে শেয়ার কিনলে এবং সময় নিয়ে আসলে ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে পারবেন।
লেগে থাকলে আপনিও সফল হবেন। প্রথমে অল্প কিছু টাকা দিয়েই আপনি এই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন।
অভিজ্ঞতাও হবে, আপনি শিখতেও পারবেন। মাত্র ৫০০ টাকা দিয়ে আপনি বিও একাউন্ট খুলে ব্যবসা করতে পারবেন। শেয়ার বাজার নিয়ে আছে আমাদের আলাদা ক্যাটাগরি। প্রতিটি আর্টিকেলস পড়লে আমি মোটামুটি ভালো পাবেন আশা করছি। শেয়ার বাজার নিয়ে পড়ুন এখানে।
৬। টিউশনি করে আয় করতে পারেন
আয়ের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো টিউশনি। সময় কম, আবার আয়ের নিশ্চয়তা। আপনি চাইলে বাসায় বসেও টিউশনি করাতে পারেন।
অথবা ছাত্র-ছাত্রীর বাসায় গিয়েও পড়াতে পারেন। মাত্র ২/৩ ঘন্টাই আপনার আয়ের জন্য যথেষ্ট। আবার পড়াশোনার মধ্যে থাকলেও আপনিও চর্চার মধ্যে থাকবেন এটাও লাভ।
আমাদের দেশে এই পেশাকে এখনও খুব সম্মানের চোখে দেখা যায়। পরিশ্রম করলে এবং সুনাম তৈরী করতে পারলে চমৎকার কমফোর্ট জোনের কাজ টিউশনি।
এই বিশ্বে কিছুই সহজ না, আবার কিছুই কঠিন নয়। আপনার স্বপ্নের জন্য আপনাকেই লড়াই করতে হবে। যেহুতু আপনি মাত্র ২/৩ ঘন্টার বেশি দিতে পারবেন না, তাই আপনাকে পরিশ্রমও করতে হবে একটু বেশি।
তবে এক্ষেত্রে পরামর্শ আপনার পছন্দের বিষয় নিয়ে কাজ করুন। আপনার প্রিয় বিষয় নিয়ে কাজ করলে আপনি আগ্রহবোধ করবেন, ব্যর্থ হলেও হাল ছেড়ে দিবেন না। পরিবারকে জানিয়ে কাজ করাই ভাল।
এক্ষেত্রে বিষয়গুলি অনেক সহজ হয়ে যায়। প্রথমে অনেকেই নেতিবাচক কথা বলতে পারে, সেটি নিয়ে না ভেবে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান।
পরিবারের সবাই বিষয়টি জানলে প্রথমে তেমন সার্পোট না করলেও, ভ’ল বোঝাবুঝিও সম্ভাবনা কমে যায়। এবং তারাও একসময় বুঝতে পারবে আপনি আপনার স্বপ্নের জন্য কাজ করছেন, নিজের একটি আইডিনটেটি তৈরী করতে চাইছেন।
তখন তারাও পাশে থাকবে। জীবনে সফল হতে গেলে লড়াইটা আপনাকেই করতে হবে, কখনো কখনো আপনি কাউকেই হয়তো সেভাবে পাশে পাবেন না।
তবু যদি লক্ষ্য স্থির করে এগিয়ে যান, তবে সফলতা ধরা দিবেই। নিজের জন্য, নিজের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসটি ’সময়’ ইনভেস্ট করুন। আপনার নিজের স্বপ্নের জন্য কাজ করুন। ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল – Bangla Preneur YouTube Channel