আপনার সব থেকে দূর্বল দিকগুলো কি কি – ইন্টারভিউ প্রশ্ন ও উত্তর

আপনার সব থেকে দূর্বল দিকগুলো কি কি 

আপনার সব থেকে দূর্বল দিকগুলো কি কি

– ইন্টারভিউ প্রশ্ন ও উত্তরঃ আপনার সব থেকে দূর্বল দিকগুলো কি কি

ইন্টারভিউ বোর্ডে একজন প্রার্থীকে যাচাই বাছাই করার জন্য বিভিন্ন আঙ্গিকে প্রশ্ন সাজানো হয়। যে বিষয়ে তিনি কাজ করবেন সেই বিষয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়, যা হয়তো আপাতত দৃষ্টিতে অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে।

কিন্তু একজন কর্মীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে জানতে চাইলে এটি অন্যতম সেরা পন্থা। আর তাই প্রায়ই ইন্টারভিউ বোর্ডে জানতে চাওয়া হয়, আপনার সব থেকে দূর্বল দিকগুলো কি কি?

মূলত দূর্বল দিক সমূহ জানতে চাওয়া হয়, একজন কর্মীর ঘাটতি সম্পর্কে জানতে নয়, বরং একটি সমস্যার প্রতি তার মনোভাব এবং সেই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং পদক্ষেপ সমূহ কি কি। এটি নিঃসন্দেহে একটি এন্যাটিক্যাল প্রশ্ন। সুন্দরভাবে গুছিয়ে উত্তর দিতে পারলে দারুন একটি ইমপ্রেশন তৈরী করা যায়।

প্রার্থীরা প্রায়ই এই প্রশ্নের উত্তর দিতে যেয়ে ঘাবড়ে যান। বুঝতে পারেন না কি বলবেন। কোন কোন ত্রুটি গুলো তুলে ধরবেন। এই বিষয়ে চমৎকার ভাবে উত্তর দিতে প্রয়োজন, পূর্ব প্রস্তুতি।

প্রথমেই আপনাকে মনে রাখতে হবে কেউই ভুলের উর্ধ্বে নয়, ত্রুটি সকলেরই আছে। কিন্তু আমরা মানুষের ত্রুটি পছন্দ করি না। আর তাই কৌশলী হয়েই আপনাকে উত্তর দিতে হবে। প্রশ্নকর্তা বা পরীক্ষক যেন আপনার ত্রুটির মধ্যেই গুণ খুঁজে পায় সেই বিষয়টি মনে রাখতে হবে। কয়েকটি উদাহরন তুলে ধরলে বিষয়টি সহজ হবে।

১। আপনি বলতে পারেন আপনি নির্ভুল ভাবে কাজ করতে পছন্দ করেন। এই কারণে ডেডলাইনের আগেই আপনি কাজটি শেষ করার জন্য অতিরিক্ত ব্যস্ত বোধ করেন। তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করার একটি প্রবণতা আপনার ভিতর কাজ করে।

যেন আপনি নিজে কাজটি রিভিউয়ের জন্য যথেষ্ট সময় পান এবং আপনার সুপারভাইজরও কারেকশন দেওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ পান।

২। এভাবেও বলতে পারেন, হঠাৎ করে প্রেজেন্টেশন কিংবা বক্তব্য দিতে আপনি অস্বস্তিবোধ করেন এবং এজন্য আপনি কোন প্রেজেন্টেশন বা বক্তব্য দেওয়ার আগে, আপনি  বার বার প্র্যাকটিস করেন। যাতে সুন্দরভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন।

৩। আপনি কর্মী বান্ধব পরিবেশের প্রতি বিশ্বাসী। সবসময় বন্ধুসুলভ আচরণ না করে, আপনি কর্মীদের সাথে এমন সম্পর্কে রাখতে চান যেন তারা এটাকে টিম বলে মনে হয়। এবং সবাই নিজেকে টিমের অংশ হিসাবে মনে করেন।

৪। কিংবা এভাবেও বলতে পারেন যে আমি একটি সফটওয়্যার সম্পর্কে শিখছি কিন্তু এখনো পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ রূপে শিখে উঠতে পারি নি তবে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি।

৫। একটি কাজ না শেখা পর্যন্ত আমি থেমে যাই না। যতসময় না শিখতে পারি, আমি চেষ্টা করে যাই। যেটা সময়সাপেক্ষ হতে পারে। তবে সমস্যা সমাধানের আগমুহূর্ত পর্যন্ত আমি চেষ্টা চালিয়ে যেতে পছন্দ করি।

জেনে নিন- ভাইবা ইন্টারভিউ বা মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতির A to Z

একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন, কোথাও কিন্তু আমি নিজের দূর্বলতা তেমনভাবে উল্লেখ করি নি। আবার যেখানে উল্লেখ করেছি সেখানে কিভাবে আমি এই সমস্যা উত্তরণের জন্য কাজ করছি সেটিও প্রকাশ করছি।

প্রথম উদাহরন এ আমি উল্লেখ করেছি আমি নির্ভুলভাবে কাজ করি এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করি।

অর্থ্যাৎ, আমাকে নিয়োগ দিলে আমার কাছ থেকে তারা এই বিষয়গুলি পাবে। দ্বিতীয় উদাহরণে আমি উল্লেখ করেছি, প্রেজেন্টশনসহ যেকোন কাজ করার আগে, আমি বার বার প্র্যাকটিস করি। যেকোন বিষয়ে অনুশীলন করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায নিঃসন্দেহে।

তৃতীয় উদাহরণে আমি বুঝাতে চেয়েছি আমি কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তাদের প্রতি মনযোগী।

চতুর্থ উদাহরণে আমি নতুন কিছু শিখতে সবসময়ই আগ্রহী সেই বিষয়টিতে আলোকপাত করেছি এবং পঞ্চম উদাহরণে আমি যে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেই না কিংবা কাজ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার মানসিকতা আমার নেই সেই বিষয়টি তুলে ধরেছে।

ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল

 

Bangla Preneur YouTube Channel 

সুতরাং পরীক্ষকদেরও, আমি আমার সম্পর্কে ইতিবাচক ভাবতে মোটিভেট করছি। আপনার ত্রুটি গুলো কি কি, এই প্রশ্নের মাধ্যমে মূলত একজন একজন পরীক্ষক জানতে চান আপনি নিজেকে নিজে কতটুকু জানেন, নিজের ত্রুটিগুলো কিভাবে তুলে ধরেন এবং এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি কি কি করছেন। আরো পড়ুন – নিজের সম্পর্কে বলুন

দূর্বলতা সকলেরই থাকে কিন্তু পরীক্ষক বুঝতে যান আপনি আপনার সেই দূর্বলতা জেনে চুপ করে বসে থাকছেন, না কি এটি মোকাবেলা করার জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। সুন্দরভাবে উত্তর দিতে পারলে সহজেই পরীক্ষকদের মন জয় করা যায়।